মতিউর রহমান (দুলাল) গোয়াইনঘাট:
সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক দিলদার হোসেন সেলিমের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৫ মে)।
২০২১ সালের এই দিনে সিলেট নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়া অঙ্গনেও ছিল সেলিমের সরব উপস্থিতি। বৃহত্তর সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির ধারা প্রতিষ্ঠায় তার অবদান আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সকলে। শুধু দলীয় নয়, বিরোধী দলীয় নেতারাও সেলিমকে একজন উদার, নির্লোভ ও মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে মূল্যায়ন করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন দিলদার হোসেন সেলিম। স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে এমসি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগ থেকে ভিপি নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতার পর এক সময় আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও ১৯৯৬ সালে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের হাত ধরে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে সিলেট-৪ আসন থেকে বিএনপির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ ও ২০১৮ সালে তিনি পুনরায় নির্বাচন করেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
রাজনীতির বাইরে তিনি ছিলেন সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন রাজপথে সক্রিয়। তরুণদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন, পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস মোকাবিলা করেও রাজনীতি করেছেন সাহসিকতার সঙ্গে।
তার মৃত্যুতে বিএনপি হারায় এক নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবীদকে। সিলেটবাসী হারায় এক অকৃত্রিম অভিভাবককে। স্থানীয় রাজনীতিকদের মতে, ‘সিলেট বিএনপিতে আর একজন সেলিম সৃষ্টি হবে না।’
তার মতো নেতার কর্মই তার চিরন্তন পরিচয় হয়ে থাকবে। নতুন প্রজন্ম তার সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসবে,এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।