Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
মজুরি বৈষম্যের শিকার নৃ-গোষ্ঠীর নারী শ্রমিকেরা - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Thursday, May 1, 2025
Homeসিলেট বিভাগমৌলভীবাজারমজুরি বৈষম্যের শিকার নৃ-গোষ্ঠীর নারী শ্রমিকেরা

মজুরি বৈষম্যের শিকার নৃ-গোষ্ঠীর নারী শ্রমিকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক,

 

বৈশাখ মাসের কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রপাত, বৃষ্টি কিংবা তীব্র তাপদাহ এসব দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাওরে ধান কাটার কাজ করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির নারী শ্রমিক বিজুলা হাজং, বেনতী হাজং, কল্পনা হাজং, সুরভী চিসাম, আরজিমা দাজেল। দুপুরে কখনো খান আবার কখনো না খেয়ে কাজ করেন। বজ্রপাত কিংবা কালবৈশাখী ঝড়ে আশপাশের গ্রামে কারো বাড়িতে আশ্রয় নিলেও রোদ-বৃষ্টিকে পরোয়া না করে ধান কাটার কাজ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবেই চলে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার নৃ-গোষ্টির নারী কৃষি শ্রমিকদের। তবু তারা শিকার হচ্ছেন মজুরি বৈষম্যের।

 

জানা যায়, নৃ-গোষ্টির নারীরা ঐতিহ্যগতভাবেই কৃষিকাজে পারদর্শী। পুরুষদের চেয়ে এসব নারী শ্রমিক কৃষিকাজে অনেকটা এগিয়ে। কিন্তু কাজ শেষে মজুরি প্রদানে বৈষম্য তাদের হতাশ করে।

 

এমনটাই জানালেন উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের ঘিলাগড়া, ইছামারী, লক্ষ্মীপুর গ্রামের আদিবাসী নারী কৃষি শ্রমিকরা।

 

সম্প্রতি উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের রূপনগর গ্রামের সামনে টাঙ্গুয়ার হাওরের ধান ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, ২১ জন কৃষি শ্রমিক ধান কেটে আটি বেঁধে মাথায় করে গৃহস্থের খলায় (হাওরে ধান মাড়াই ও শুকানোর স্থান) পৌঁছে দেয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের ১২ জন নারী শ্রমিক।

 

দুপুরের তীব্র তাপদাহের মধ্যেই বিরামহীন কর্মব্যস্ত এসব আদিবাসী নারী শ্রমিকের ছবি ধারন করার অনুমতি চাইলে তারা শোনান কষ্টের কথা।

 

মজুরি বৈষম্য নিয়ে কথা হয় আদিবাসী নারী শ্রমিক বিজুলা হাজং, বেনতী হাজং, কল্পনা হাজংয়ের সঙ্গে। তারা বলেন, বোরো ধান মৌসুমে ধান রোপন, জমির আগাছা পরিষ্কার এবং ধান কাটা, মাড়াইয়ের কাজ করি আমরা। কিন্তু আমরা আমাদের ন্যায্য মজুরি কখনোই পাই না। তুলনামূলক পুরুষের চেয়ে আমরা বেশী কাজ করি। অথচ পুরুষের মজুরী সাতশো টাকা আর আমরা পাই মাত্র পাঁচশত টাকা। তারপরেও পেটের দায়ে কাজ তো করতেই হয়।

 

মধ্যনগর উপজেলা আদিবাসী ট্রাইব্যাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অজিত হাজং বলেন, আদিবাসী নারী ঘরে-বাইরে সবখানে আামাদের পুরুষের চেয়ে অনেক বেশী পরিশ্রম করে। কিন্তু শুধু নারী বলেই তাদের পারিশ্রমিক যে কোনো পুরুষের চেয়ে কম দেওয়া হয়। প্রথাগতভাবে এমনটাই হয়ে আসছে। তবে এ বিষয়টি অন্যায্য।

 

স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা জনাশিউশ’র সভাপতি সাজেদা আহমেদ বলেন, নারী শ্রমিকদের মুজুরী বৈষম্য শুধু আদিবাসী নারীদের বেলায় নয়, আমাদের এলাকায় এমনকি পুরো দেশে সকল শ্রমজীবী নারীরা মুজুরী বৈষম্যের শিকার। মাঠপর্যায়ে অসহায় দরিদ্র নারীরা যারা মাঠে-ঘাটে কাজ করেন, তাদের মজুরিটা কখনোই সঠিকভাবে দেয়া হয় না। এ বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে এবং নারীদের শ্রমের সঠিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

মধ্যনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফাহিমা খানম বলেন, নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে তাদের কাজের প্রকৃত মূল্য দিতে হবে। কোনোভাবেই তারা যেন প্রকৃত প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য সামাজিকভাবে সচেতন থাকতে হবে। নারী শ্রমিকের মজুরি বৈষম্য নিয়ে কোনো অভিযোগ পেলে অবশ্যই তা ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments