দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
দোয়ারাবাজার উপজেলার দোয়ারাবাজার-শ্রীপুর-বড়কাপন সড়কে হাতের টানে ওঠে যাচ্ছে পিচ। সংষ্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। এসব অনিয়ম দেখার যেন কেউ নেই। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ দিচ্ছেন দায়সারা বক্তব্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কে পাথর, বিটুমিনসহ চলমান সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং এলজিইডি কর্তৃপক্ষ তদারকি না করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ দিকে দোয়ারাবাজার-শ্রীপুর-বড়কাপন সড়ক সংষ্কার কাজে অনিয়ম ঠেকাতে সম্প্রতি এলাকাবাসী এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের দোয়ারাবাজার ভায়া শ্রীপুর থেকে ছাতক উপজেলার বড়কাপন ভায়া কফলা বাজার পর্যন্ত ২১ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে।
সড়কের কাজটি পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালেহ এন্ড ব্রাদার্স। অভিযোগ আছে, কাজের শুরু থেকে ব্লক, গার্ডওয়াল, নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এতে পিচ ঢালাইয়ের পূর্বেই গার্ডওয়াল এবং ব্লকগুলোতে ফাটল এবং অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে। ওই সড়কে ইতোমধ্যে শ্রীপুর বাজার হতে রাধানগর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে পিচ গালা করা সম্পন্ন হয়েছে।
এ কাজে উপজেলা প্রকৌশলী’র প্রতিনিধি উপস্থিত থেকেও কাজের গুণগত মান অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। যার ফলে দুই কিলোমিটার পিচ সম্পন্ন হওয়া সড়কের বিভিন্ন অংশে এখন ফাটল দেখা দিয়েছে এবং বৃষ্টির ফলে হাতে টান দিলেই ওঠে যাচ্ছে পিচ।
উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করায় কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই উঠে গেছে। পাথর, বিটুমিনসহ চলমান সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ি চলাচল করায়ও পিচ অনেক জায়গায় উঠে যাচ্ছে।
শ্রীপুর-আফসর নগর গ্রামের আক্কাছ আলী জানান, ঠিকাদারের লোকজন ময়লা-আর্বজনা পরিষ্কার না করে কাজ করেছেন। কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করে পিচ দেওয়ার কথা। তা না করে গাছের পাতা ও ময়লার ওপরই পিচ দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী এক ইঞ্চি ঢালাই হওয়ার কথা থাকলেও যেসব জায়গার পিচ উঠে গেছে সেখানে এক ইঞ্চি না দিয়ে হাফ ইঞ্চি পিচ ঢালাই দেওয়া হয়েছে।
একই গ্রামের মাওলানা নিজাম উদ্দিন নোমানী জানান,
পিচ দেওয়ার আগে যখন ইটের সুরকি দেওয়া হয় তখন রোলার মেশিন দিয়ে সমান করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রোলার দিয়ে সমান না করে পিচ দিয়েছে। ফলে কাজ শেষ হওয়ার আগেই পিচ উঠে যাচ্ছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি ফয়সল আহমদ সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, কিছু জায়গায় ফাটল এবং পিচ উঠে গেছে এগুলো আমরা দ্রুত রিপিয়ারিং করে দেব।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ দায়সার বক্তব্য দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, এরকম হওয়ার কথা না। আমরা কাজের তদারকি করেছি। এমন হয়ে থাকলে অবশ্যই রিপিয়ারিং করে দিতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নেহের নিগার তনু বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলজিইডি অফিসারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।