Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ পালন করা সুস্পষ্ট হারাম - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Friday, April 18, 2025
Homeইসলামপহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ পালন করা সুস্পষ্ট হারাম

পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ পালন করা সুস্পষ্ট হারাম

ধর্ম ডেস্ক,

 

উৎসব সাধারণত একটি জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়। উৎসবের উপলক্ষগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে প্রবাহিত ধর্মীয় অনুভূতি, সংস্কার ও ধ্যান-ধারণার ছোঁয়া। আর এজন্যই ইসলাম ধর্মে নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) পরিষ্কারভাবে মুসলিমদের উৎসবকে নির্ধারণ করেছেন। আমাদেরকে ইসলামে স্বীকৃত উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। অন্যদের উৎসব মুসলিমদের সংস্কৃতিতে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ঈদ রয়েছে। আর এটি আমাদের ঈদ। [সহীহ বুখারী, মুসলিম]

 

আনাস ইবনে মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন (মদীনায়) আসলেন তখন তাদের দুটো উৎসবের দিন ছিল। তিনি বললেনঃ এ দুটো দিনের তাৎপর্য কি? তারা বললঃ জাহিলিয়াতের যুগে আমরা এ দুটো দিনে উৎসব করতাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে এদের পরিবর্তে উত্তম কিছু দিয়েছেন, ইয়াওমুদ্দুহা (ঈদুল আযহা) ও ইয়াওমুল ফিতর (ঈদুল ফিতর)। [সুনান আবু দাউদ]

 

এ হাদীস থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ইসলাম আগমনের পর ইসলাম বহির্ভূত সকল উৎসবকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং নতুনভাবে উৎসবের জন্য দুটো দিনকে নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সাথে অমুসলিমদের অনুসরণে যাবতীয় উৎসব পালনের পথকে বন্ধ করা হয়েছে।

 

বাংলা অথবা ইংরেজি নববর্ষ পালন করা মূলত কাফিরদের সংস্কৃতির একটি অংশ। আর কাফিরদের অনুসরণ অনুকরণ করা কিংবা তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা সম্পূর্ণরূপে হারাম। রাসূল (ﷺ) বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভুক্ত। [সুনানে আবু দাউদ ৪০৩১, আলবানী “সহীহ সুনানে আবি দাউদ” গ্রন্থে হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন]

 

ইবন কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ কোন মুসলিমের সুযোগ নেই কাফেরদের সামঞ্জস্য গ্রহণ করা, না তাদের ধর্মীয় উৎসবে, না মৌসুমি উৎসবে, না তাদের কোন ইবাদতে। কারণ আল্লাহ তা’আলা এ উম্মতকে সর্বশেষ নবী দ্বারা সম্মানিত করেছেন, যাকে পরিপূর্ণ ও সর্বব্যাপী দ্বীন দেয়া হয়েছে। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/১৪২]

 

নববর্ষের অনুষ্ঠানাদিঃ শয়তানের পুরোনো কূটচালের নবায়ন,

 

আমাদের সমাজে নববর্ষ যারা পালন করে, তারা কি ধরনের অনুষ্ঠান সেখানে পালন করে আর সেগুলো সম্পর্কে ইসলামের বক্তব্য কি? নববর্ষের অনুষ্ঠানাদির মধ্যে রয়েছে পটকা ফুটিয়ে বা আতশবাজি পুড়িয়ে রাত ১২টায় হৈ হুল্লোড় করে পরিবেশ ও প্রতিবেশির শান্তি বিনষ্ট করে নববর্ষকে স্বাগত জানানো, ব্যান্ড সঙ্গীত বা অন্যান্য গান-বাজনার ব্যবস্থা, সম্ভ্রান্ত পল্লীর বাড়ীতে বা ক্লাবে গান-বাজনা, মদ্যপান ও ব্যভিচারের আয়োজন ইত্যাদি। এছাড়া রেডিও টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠান ও পত্র-পত্রিকার বিশেষ ক্রোড়পত্র ও রাশিফল প্রকাশ। শয়তান নির্দেশিত এ সমস্ত কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে ইসলাম বিরোধী। ইসলামের সাথে এসবের কোন সম্পর্ক নেই।

 

নতুন দিন তথা সূর্যকে স্বাগত জানানোঃ

এ ধরনের কর্মকান্ড মূলত সূর্য পূজারী ও প্রকৃতি পূজারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অনুকরণ মাত্র, যা আধুনিক মানুষের দৃষ্টিতে পুনরায় শোভনীয় হয়ে উঠেছে। সূর্য ও প্রকৃতির পূজা বহু প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন জাতির লোকেরা করে এসেছে। যেমনঃ খ্রীস্টপূর্ব ১৪ শতকে মিশরীয় অ্যাটোনিসম মতবাদে সূর্যের উপাসনা চলত। এমনি ভাবে ইন্দো-ইউরোপীয় এবং মেসো-আমেরিকান সংস্কৃতিতে সূর্য পূজারীদেরকে পাওয়া যাবে। ১৯ শতাব্দীর উত্তর-আমেরিকায় কিছু সম্প্রদায় গ্রীষ্মের প্রাক্কালে পালন করত সৌর-নৃত্য এবং এই উৎসব উপলক্ষে পৌত্তলিক প্রকৃতি পূজারীরা তাদের ধর্মীয়-বিশ্বাসের পুনর্ঘোষণা দিত। মানুষের ভক্তি ও ভালবাসাকে প্রকৃতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টির সাথে আবদ্ধ করে তাদেরকে শিরক বা অংশীদারিত্বে লিপ্ত করানো শয়তানের সুপ্রাচীন “ক্লাসিকাল ট্রিক” বলা চলে। শয়তানের এই কূটচালের বর্ণনা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে তুলে ধরেছেনঃ আমি তাকে ও তার জাতিকে দেখেছি তারা আল্লাহকে ছেড়ে সূর্যকে সিজদা করছে এবং শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের জন্য শোভনীয় করেছে। [সূরা নামল, আয়াত ২৪]

 

নারী সম্পর্কিত বিভিন্ন অশ্লীলতাঃ

নববর্ষের পার্টি বা “উদযাপন আয়োজনের” অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে নারীর সহজলভ্যতা। নববর্ষের অনুষ্ঠানাদির মধ্যে সমাজ-বিধ্বংসী যে বিষয়গুলো পাওয়া যাবে, তার মাঝে অন্যতম হচ্ছে নারীকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীলতা। নববর্ষের পার্টি বা উদযাপন আয়োজনের সবর্ত্রই সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী নারীকে পুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশায় লিপ্ত দেখা যাবে। নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নারীর যে অবাধ উপস্থিতি, সৌন্দর্য প্রদর্শন এবং পুরুষের সাথে মেলামেশা তা পরিপূর্ণভাবে ইসলাম বিরোধী, তা কতিপয় মানুষের কাছে যতই লোভনীয় বা আকর্ষণীয়ই হোক না কেন। এই অনুষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের ধ্বংসের পূর্বাভাস দিচ্ছে।

 

ব্যভিচারের প্রতি আহ্বান জানানো শয়তানের ক্লাসিকাল ট্রিকগুলোর অপর একটি, যেটিকে কুরআনে “ফাহিশাহ” শব্দের আওতায় আলোচনা করা হয়েছে। শয়তানের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেনঃ হে মানুষ, পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র বস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার করো আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তো তোমাদের নির্দেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন সব বিষয় বলতে যা তোমরা জান না। [সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৮-১৬৯]

 

এছাড়া যা কিছুই মানুষকে ব্যভিচারের দিকে প্রলুব্ধ ও উদ্যোগী করতে পারে, তার সবগুলোকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে কুরআনের এই আয়াতের দ্বারাঃ তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। অবশ্যই এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পন্থা। [সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ৩২]

 

সঙ্গীত ও বাদ্যঃ

নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকে সংগীত ও বাদ্য। ইসলামে নারীকন্ঠে সংগীত নিঃসন্দেহে নিষিদ্ধ। সাধারণভাবে বাদ্যযন্ত্রকেও ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা মদ, জুয়া ও সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন। [বায়হাক্বী, হাদিস সহীহ; মিশকাত, হাদিস নং ৪৫০৩]

 

আবু মালেক আশআরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি নবী (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেনঃ অবশ্যই আমার উম্মতের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায় হবে যারা ব্যভিচার, রেশম বস্ত্র, মদ এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হালাল মনে করবে। [সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৫৫৯০; হাদীস সম্ভার, হাদিস নং ২৩০৭]

 

তাই যে সকল স্থানে এ সকল হারাম সংগীত উপস্থাপিত হয় সে সকল স্থানে যাওয়া, এগুলোতে অংশ নেওয়া, এগুলোতে কোন ধরনের সহায়তা করা কিংবা তা দেখা বা শোনা সকল মুসলিমের জন্য হারাম। এ সকল হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা মুসলিমদের জন্য বাধ্যতামূলক।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments