Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
পান্তা-ইলিশ: বাংলা নববর্ষের এক অনন্য ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Wednesday, April 16, 2025
Homeবিনোদনলাইফস্টাইলপান্তা-ইলিশ: বাংলা নববর্ষের এক অনন্য ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

পান্তা-ইলিশ: বাংলা নববর্ষের এক অনন্য ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

লাইফস্টাইল ডেস্ক,

বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। নববর্ষ মানেই নতুন বছরের নতুন সকাল, নতুন কল্পনা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সুবাস। এ দিনটি সাধারণত ইংরেজি এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখে উদযাপিত হয়। পহেলা বৈশাখের আনন্দে সবাই নতুন জামাকাপড়ে সেজে ওঠে। ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সুরে মুখোরিত হয় গোটা দেশ। এছাড়াও এ দিনে বাঙালির প্রাণের স্পন্দন হয়ে ওঠে এক বিশেষ খাবার — পান্তা-ইলিশ। এ খাবারটি শুধু বাংলার খাদ্য সংস্কৃতির একটি অংশ নয়, বরং এটি নববর্ষের আবহে এক বিশেষ অনুভূতি তৈরি করে। তাই পান্তা-ইলিশ শুধু একটি খাবার নয়, বাঙালির সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, এক অনন্য আবেগ।

 

পান্তা ভাতের সূচনা মূলত কৃষিভিত্তিক সমাজে, যেখানে চাষিরা রাতের অবশিষ্ট ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে তা খেতেন পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, লবণ আর কিছু শাকপাতার সঙ্গে। একদিকে এটি যেমন ছিল সহজলভ্য ও হজমে সহায়ক, অন্যদিকে ছিল চাষির পরিশ্রমী জীবনের প্রতীক।

 

নববর্ষে এই সাধারণ খাবারই পরিণত হয় এক উৎসবের উপকরণে, যেখানে ইলিশ মাছ যুক্ত হয়ে যায় তার পাশে। ইলিশের স্বাদ, গন্ধ ও গৌরব সাদামাটা পান্তাকে করে তোলে রাজকীয়।

 

আধুনিক নগরজীবনে নববর্ষ মানেই চারুকলার আনন্দ শোভাযাত্রা, পহেলা বৈশাখের পোশাক আর পান্তা-ইলিশ খাওয়ার মিলনমেলা। রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে অফিস ক্যান্টিন—প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই এই দিনে বিশেষ মেনু হিসেবে পরিবেশন করা হয় পান্তা-ইলিশ। রমনার বটমূলসহ অনেক জায়গায় আয়োজন করা হয় ‘পান্তা উৎসব’-এর, যেখানে লোকসংগীত, পল্লীগীতি আর নৃত্যের সঙ্গে চলে ঐতিহ্যবাহী খাবার খাওয়ার আনন্দ।

 

তবে কিছু বছর ধরে পান্তা-ইলিশ নিয়ে বিতর্কও দেখা দিয়েছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই সময় ইলিশের দাম বেড়ে যায় হঠাৎ করে, যা অনেকের নাগালের বাইরে চলে যায়। এছাড়া বৈশাখ মাস ইলিশ ধরার উপযুক্ত সময় নয় বলেও দাবি করেন অনেক মৎস্য বিজ্ঞানী। তাই এখন অনেকেই পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়ার চাহিদা কমানোর পক্ষে মত দেন, এবং বিকল্প মাছ বা শাক-ভাজি-ভর্তা দিয়ে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানান।

 

তবু পান্তা-ইলিশ শুধুই খাবার নয় — এটি বাঙালির এক ঐতিহ্য ও আবেগের প্রতীক। এটি আমাদের মাটির টান, পরিশ্রমের সম্মান আর উৎসবের আনন্দের এক রূপক। সময়ের সাথে রুচি ও চাহিদা বদলালেও এই ঐতিহ্যটি নববর্ষের ‘মর্নিং রিচুয়াল’ হিসেবেই থেকে যাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

 

পহেলা বৈশাখের পান্তা-ইলিশ ঐতিহ্য শুধু একটি খাবার নয়, এটি বাংলার সংস্কৃতি, পারিবারিক বন্ধন, এবং আঞ্চলিক ঐতিহ্যের এক গৌরবময় প্রতীক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই ঐতিহ্য চলে আসছে এবং আজও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে রয়েছে বাংলা নববর্ষের শুভলগ্নে।

 

পান্তা-ইলিশে হোক বাংলা নববর্ষের সূচনা, বেঁচে থাক সংস্কৃতির গৌরব, চলুক ঐতিহ্যের জয়গান।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments