Sunday, November 24, 2024
Homeইসলামশালীনতা ও লাজুকতা জীবনের সৌন্দর্য

শালীনতা ও লাজুকতা জীবনের সৌন্দর্য

 

ইসলামী জীবন,

আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টির সেরা বানিয়ে কিছু স্বভাবজাত গুণ দিয়েছেন। সে গুণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, হায়া-শরম, শ্লীলতা ও শালীনতা। অন্যদিকে উত্তম চরিত্র মানবজীবনের অতি মূল্যবান সম্পদ, যাকে মানবজীবনের ভূষণ ও বলে অভিহিত করা যায়। আর উত্তম চরিত্রের ভূষণ হলো শালীনতা বা লজ্জা-শরম ও লাজুকতা।

 

 

যে কাজের কারণে জনসমক্ষে মস্তক অবনত হতে পারে সেই ভয়ে তা পরিহার করা বা তা থেকে বিরত থাকার নাম হায়া বা লজ্জা।

এই লজ্জাই মানুষকে গর্হিত, অশ্লীল ও নানামুখী খারাপ কর্ম থেকে বিরত রাখে। যার ফলে মানুষ উত্তম চরিত্রের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে যার লজ্জা নেই তার কোনো কাজ করতে বিবেক বাধা দেয় না, ফলে সে ভালো-মন্দ কাজ সব কিছু করা যেন তার অতি সহজ ও সাধারণ হয়ে যায়।

 

 

মন যা চায় সবই যেন করে বাধাহীনভাবে। ফলে হয়ে যায় সমাজের চোখে নিন্দিত ও ঘৃণিত।

লজ্জাশীলতা ও শালীনতার গুরুত্ব

 

শরম-হায়া বা লাজুকতা আল্লাহর দেওয়া বান্দার প্রতি মানব চরিত্রের এক মহা গুরুত্বপূর্ণ গুণ। মানুষকে গর্হিত ও অশোভন কর্ম পরিহারে এবং ভালো উত্তম এবং শোভনীয় কার্য সম্পাদনে শালীনতা সহায়তা ও অসম্ভব ভূমিকা রাখে।

 

এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আল্লাহ অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও জুলুম থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন, যেন তোমরা স্মরণ রাখতে পারো।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯০)

ইসলামের দৃষ্টিতে অশ্লীলতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘বলুন, নিশ্চয়ই আমার রব অশ্লীল কাজ হারাম করেছেন। চাই তা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে।

 

’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩৩)

এই দুই আয়াতে অশ্লীল সব আচরণ উচ্চারণ থেকে নিষেধ করা হয়েছে, এটা নিষেধের ভঙ্গিতে শ্লীলতা ও লজ্জাশীলতা অবলম্বনের আদেশও বটে।

 

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক আনসারি সাহাবির পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তখন সে তার ভাইকে লজ্জা করার ব্যাপারে আদেশ দিচ্ছিল। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬১৫)

 

হাদিসের ভাষ্য মতে, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, লজ্জা হলো ঈমানের অঙ্গ। (মুসলিম, হাদিস : ৩৫)

 

লজ্জা ও শালীনতার সুফল

 

শালীনতা ও লাজুকতা জীবনকে সুন্দর করে। আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো কিছুতে অশ্লীলতা তাকে শুধু কলুষিত করে। আর কোনো কিছুতে লজ্জা তাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১২৬৮৯)

 

প্রসিদ্ধ ঘটনা, নবী ইউসুফ আলাইহিস সালামের লজ্জা ও শালীনতার কারণে শুধু জেল থেকে মুক্তি পাননি, বরং তৎকালীন রাজ্যের বাদশাহিয়াত মিলেছিল এবং তাঁকে বানিয়েছিলেন মিসর অধিপতি। কারণ, তিনি সদা সর্বদা লজ্জাশীলতা ও লাজুকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।

 

আমরাও যদি নবী ইউসুফ আলাইহিস সালামের মতো ইজ্জত ও আব্রুর হেফাজত করতে পারি, গুনাহ পাপাচার থেকে বেঁচে থাকতে পারি এবং সব ধরনের কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে সংযত রাখি, তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদেরও ইজ্জত ও সম্মানের মুকুট পরাবেন।

 

মহান আল্লাহ আমাদের লজ্জা ও শালীনতার গুণ অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments