বিনোদন প্রতিবেদক :
চাইলে তার জন্য বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুতোয় শাড়ি বুনিয়ে দিতে পারেন পোশাকশিল্পীরা। কিন্তু ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানী পত্নী নীতা আম্বানী বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য সব সময় বেছে নেন নিজ দেশ ভারতের খাঁটি ও ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। তার চাহিদা অনুসারে সেই শাড়িতে হয়তো কিছু আলাদা নকশা তুলে দেন পোশাকশিল্পীরা। কিন্তু বুনন থাকে ভারতীয় তাঁতিদেরই।
লাল বেনারসি শাড়ি :
রক্তের মতো লাল নয়, এই লালে মিশে আছে খানিক মিষ্টি গোলাপি আভা। শুধু রঙেই নজর কাড়তে পারতো ওই শাড়ি। কিন্তু জমি জুড়ে অন্য রকম বেনারসির নকশা নজর ঘোরায়। বুটি বা কলকা নয়, শাড়ি জুড়ে সোনালি আর রুপোলি স্ট্রাইপ। তাতে খুব সূক্ষ্ম নকশার কারুকাজ শিল্পীর হাত – যশ বোঝায়। শাড়ির পাড়েও সোনা – রুপোর রংমিলন্তি। আঁচল ঢালা সোনালি রঙের। যেকোনো বিয়েবাড়িতে এমন একটি লাল বেনারসি শাড়ি নানা ভাবে পরে আপনি হয়ে উঠতে পারেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
গুজরাটি বাঁধনি শাড়ি :
আম্বানী পরিবারের শিকড় গুজরাটে। সেই গুজরাটের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি বাঁধনি। আবার গুজরাটের শাড়িতে মিরর ওয়ার্কেরও কদর আছে ফ্যাশন দুনিয়ায়। নীতার নীল রঙের বাঁধনি শাড়ির বিশেষত্ব হল এর ছোট ছোট আয়না এবং মুক্তোপুঁতি দিয়ে করা নকশা। নীল – সাদা বাঁধনির কাজের শাড়ির পাড়ের নকশায় হলুদ, আকাশি, মেরুন, গোলাপি, সবুজের ছোঁয়া। বিয়েবাড়ি তো বটেই, নানা অনুষ্ঠানেও গুজরাটি বাঁধনি শাড়ি নানা ভাবে পরা যেতে পারে। তাই আলমারিতে একটি বাঁধনি শাড়ি রাখতেই পারেন।
লখনউয়ের চিকনকারি শাড়ি :
লখনউয়ের চিকনকারির সমাদর দুনিয়াজোড়া। লখনউয়ের চিকনকারি শিল্পীদের দিয়ে নীতা’র জন্য শাড়ি তৈরি করিয়েছেন পোশাকশিল্পীদ্বয় আবু জানি এবং সন্দীপ খোসলা। চিকনকারির কাজ সাধারণত হালকা রঙের উপরেই করা হয়। নীতা’র শাড়িটিও হালকা বেইজ এবং হালকা গোলাপির মিলমিশ। নীতা শাড়িটি পরেছেন মুক্তো – গাঁথা ব্লাউজ দিয়ে। যেকোনো অনুষ্ঠানে চিকনকারি শাড়ি, মুক্তোপুঁতি গাঁথা ব্লাউজ দিয়ে পরতে পারেন আপনিও।
মহারাষ্ট্রের পৈঠানি শাড়ি :
চওড়া পাড় এবং আঁচলে জড়ির উপর রেশমের ফুল লতাপাতার নকশা। মিহি সিল্কের একরঙা জমি। নীতা’র শাড়ির নকশা অজন্তা গুহার শিল্প – অনুপ্রাণিত। শাড়ির জরিও তৈরি হয়েছে আসল সোনা দিয়ে। মহারাষ্ট্রের পৈঠানি শাড়ির কদর শাড়িপ্রেমীদের কাছে বরাবরই ছিল। এর কারণ হলো পৈঠানির জাঁকজমক। আড়ম্বরপূর্ণ সাজের অনুষ্ঠানের জন্য এমন শাড়ি বেছে নিতে পারেন।
বিহারের সুজনি তসর :
তসর শাড়ির প্রতি সৌখিনী বঙ্গললনাদের অনেকেরই দুর্বলতা। নীতা অবশ্য পরেছেন বিহারের সুজনি তসর শাড়ি। তসর রঙের নকশাহীন জমির উপর হালকা এবং স্মার্ট নকশার পাড়ে নীতাকে সুন্দর দেখাচ্ছে। তবে নীতাকে দেখে বঙ্গললনাদের তসর কিনতে হবে না নিশ্চয়ই। বাঙালি বাড়িতে খুঁজে পেতে একটি তসর শাড়ি অন্তত পাওয়াই যাবে।
তামিলনাড়ুর কাঞ্জিভরম শাড়ি :
তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমের ঐতিহ্যবাহি শাড়ি কাঞ্জিভরম। ইদানীং ভারতীয় পোশাকশিল্পীরা বলিউডের নায়িকাদের নানা রকমের কাঞ্জিভরম শাড়ি পরাচ্ছেন। নীতাও পরেছেন কাঞ্জিভরম। তবে ঘিয়ে রঙের কাঞ্জিভরম শাড়িতে গাঢ় রঙের পাড় নেই, যেমনটা সাধারণত কাঞ্জিভরম শাড়িতে থাকে। বদলে একরঙা শাড়ির পাড়ে একই রঙের জরির নকশা করিয়ে দিয়েছেন পোশাকশিল্পী মণীশ মলহোত্রা। এমন একরঙা কাঞ্জিভরম রাতের ককটেল পার্টিতে পরার পোশাক হিসাবেও আদর্শ।
ছত্তীসগঢ়ের কোসা সিল্ক শাড়ি :
ছত্তীসগঢ়ের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি কোসা সিল্ক। নীতা একটি অনুষ্ঠানে পরেছিলেন সাদা জমির কোসা সিল্ক। ছত্তীসগঢ়ের ওই সিল্ক বিদেশেও রফতানি হয়। এই শাড়ির বিশেষত্ব তার মাটা জরির পাড় এবং কাজে। জরির রং উচ্চকিত নয়। সেই জন্যই ওই শাড়ি বিশেষ দিনে অফিসেও যেমন পরা যায়, তেমনই সেজেগুজে পরে নেওয়া যায় পার্টি উপলক্ষেও।
