Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
ইসলামে হিল্লা বিয়ে কি জায়েজ? - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Friday, April 18, 2025
Homeইসলামইসলামে হিল্লা বিয়ে কি জায়েজ?

ইসলামে হিল্লা বিয়ে কি জায়েজ?

ইসলামী জীবন বিধান,

 

হিল্লা বিয়ে বলতে বোঝায় কোনো স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর আবার যদি ওই স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে চান, তবে কুসংস্কার মতে, তালাকে দেওয়া স্ত্রীকে আগে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। পরে আগের স্বামী যদি রাজি থাকেন, তবেই পুনরায় ওই স্ত্রীকে গ্রহণ করতে পারবেন।

 

কোন স্বামীর তিন ত্বালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে এ শর্তে বিয়ে করা যে, বিয়ের পর সহবাস শেষে স্ত্রীকে ত্বালাক দিবে, যেন সে পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হয়, সে তাকে পুনরায় বিয়ে করতে পারে’। এটাই প্রচলিত হিল্লা। এর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। আলী বিন আবী ত্বালিব, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ও আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূল (ﷺ) হিল্লাকারী এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে অভিসম্পাত বা লানত করেছেন’ (তিরমিযী, হা/১১১৯, ১১২০; আবূ দাঊদ, হা/২০৭৬; ইরওয়াউল গালীল, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩০৮-৩০৯)।

 

অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অভিসম্পাত বা লা‘নত করেছেন সে সব নারীদের, যারা উল্কি আঁকায় এবং উল্কি আঁকার জন্য নির্দেশ দেয়। আর যে নারী নিজের চুলের সাথে অন্যের চুল মিলায় এবং যে নারী এরূপ করার আদেশ করে। আর যে সূদ খায় এবং সূদ খাওয়ায়, আর যে হিল্লা করে এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় (নাসাঈ, হা/৩৪১৬, ৩৪২০; মুসনাদ আহমাদ, হা/১৩৬৪, ৪২৮৩, ৪২৮৪, ৪৪০৩, সনদ ছহীহ; ইরওয়াউল গালীল, হা/১৮৯৭)।

 

রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আমি কি তোমাদের ভাড়াটে পাঁঠা সম্পর্কে অবহিত করব না? তারা বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! তিনি বলেন, সে হল হিল্লাকারী। আল্লাহ হিল্লাকারী এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় তাদের উভয়কে অভিসম্পাত বা লা‘নত করেছেন (ইবনু মাজাহ, হা/১৯৩৬; মুসতাদরাক হাকিম, হা/২৮৪৩-২৮৪৪, সনদ হাসান; ছহীহুল জামি‘, হা/২৫৯৬)। অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ﷺ)-এর যুগে এটাকে যিনা হিসাবে গণ্য করা হত (মুসতাদরাক হাকিম, হা/২৮৪৫; উমদাতুত তাফসীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৮৩; ইরওয়াউল গালীল, হা/১৮৯৮)। ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হিল্লা সম্পর্কে বলেন, ‘আমার নিকট হিল্লাকারী এবং যার জন্য হিল্লা করা হয় তাদের পেশ করা হলে, আমি তাদেরকে ‘রজম’ বা প্রস্তরাঘাত করব’ (মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হা/৩৬১৯১; বায়হাক্বী, আস-সুনান আল-কুবরা, হা/১৪১৯১; ইগাসাতুল লাহফান লি ইবনুল ক্বাইয়্যিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪১১, সনদ ছহীহ)।

 

ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর ইদ্দাত শেষ হওয়ার পর কোন পুরুষ যদি তাকে স্বেচ্ছায় বিয়ে করে, ত্বালাক দেওয়ার পরিকল্পনা বা বৈধ করার উদ্দেশ্য ছাড়াই সহবাস করে এবং পরবর্তীতে যদি দ্বিতীয় স্বামী কোন কারণে তাকে স্বেচ্ছায় ত্বালাক দেয় বা মারা যায়, সেক্ষেত্রে প্রথম স্বামী তাকে আবার বিয়ে করতে পারবে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৩০)।

 

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে তার স্ত্রীকে তিন ত্বালাক দিয়েছে, ফলে সে অন্য পুরুষকে বিয়ে করে তার সাথে নির্জনবাস করে, অতঃপর সহবাস ব্যতীতই স্বামী তাকে ত্বালাক দেয়, সে কি পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে? নবী (ﷺ) বললেন, ‘প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, যতক্ষণ না সে অপরের সহবাসের স্বাদ গ্রহণ করে এবং সে তার সহবাসের স্বাদ গ্রহণ করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫২৬১, ৫২৬৫, ৫৭৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৩৩)।

 

হিল্লা বিয়ে নামে আমাদের সমাজে যে প্রচলন রয়েছে, এটা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। এটি একটি সামাজিক অনাচার। এটাকে বিয়ে বলা হয়ে থাকে, কিন্তু এটি একটি হারাম কাজ। যিনি এই বিয়ে করবেন, তিনি হারাম কাজ করবেন। এমনকি এই বিয়ের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত থাকবেন, তারা অভিশপ্ত হবেন। আর, যার উদ্দেশ্যে এই বিয়ে করা হবে, তিনিও অভিশপ্ত হবে। এটি একটি অনাচার।

 

সুতরাং, এ ধরনের হিল্লা বিয়ের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা সবাই গুনাহগার হবেন। ইসলামের ভাষায় তারা অভিশপ্ত। এটা যদি কোনো সমাজে প্রচলিত থাকে, তাহলে সে সমাজ অনাচারে লিপ্ত।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments