Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে শ্রীমঙ্গলে সংলাপ ও ২টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন  - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Monday, April 28, 2025
Homeসিলেট বিভাগমৌলভীবাজারনারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে শ্রীমঙ্গলে সংলাপ ও ২টি গ্রন্থের মোড়ক...

নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে শ্রীমঙ্গলে সংলাপ ও ২টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন 

 

ঝলক দত্ত, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি:

নারীর প্রতি সহিংসতা: সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান’ উপলক্ষে ‘নারী চা শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য’ শীর্ষক সংলাপ এবং চা শ্রমিকদের নিয়ে প্রকাশিত ২টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর ) সকালে শ্রীমঙ্গলের ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড), ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টার (বিআরসি) ও পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)।

 

আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘নারী চা শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য’।

 

চা শ্রমিকদের নিয়ে সেড-এর জরিপ ও অনুসন্ধান-ভিত্তিক সদ্য প্রকাশিত ১৫২ পৃষ্ঠার বই, টি ওয়ার্কার্স অব বাংলাদেশ: রিয়ালিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস (বাংলাদেশের চা শ্রমিক: বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ) গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ প্রকাশনায় চা শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, কর্মপরিবেশ, চা বাগানে শ্রম আইনের প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ, মজুরি, স্বাস্থ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা, সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—উপাত্ত ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। বই-এ নারী চা শ্রমিকদের বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।

 

চা বাগান নিয়ে সেড’র এই নতুন প্রকাশনা ও পূর্বের আরও প্রায় ডজনখানেক প্রকাশনার সাথে সবাইকে পরিচিত করে সেড’র পরিচালক ফিলিপ গাইন বলেন, “বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান চা শিল্পের মালিকানায় শ্রমিদের অংশিদারিত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। এরকম স্মল হোল্ডিং-এর মডেল আছে শ্রীলঙ্কায়। এ ধরণের মডেল নিয়ে কী আমরা বাংলাদেশে কথা বলতে পারছি? তাহলে কীভাবে বৈষম্যের অবসান হবে!”

 

আলোচনা পর্বে নারীকন্ঠ হিসাবে যৌনকর্মীদের নিয়ে কর্মরত অধিকার কর্মী রাজিয়া সুলতানা যৌনকর্মীদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বলেন, “পূর্বেও রাষ্ট্রের কাছে যৌনকর্মীরা তেমন সাহায্য পায়নি। ছাত্র আন্দোলনের পরে এই কর্মীদের অবস্থা এখন আরও খারাপ। ভাসমান যেসব যৌনকর্মী আছে তারা এখন রাস্তায় কোথাও দাঁড়াতে পারে না, ছাত্র পরিচয়ের কেউ না কেউ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। উপার্জন তো ওদের কিছু লাগবে। এই পরিচয়ের কথা শুনলে অন্য কোনও চাকুরিতেও নিতে চায় না কেউ। কোথায় যাবে এরা?”

 

“আমাদের মতো চা শ্রমিক, বিশেষ করে মাঠে কাজ করা এতো নারী চা শ্রমিকের কথা চিন্তা করে কী শ্রম আইনের সংশোধন হয়?” এমন প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (বিসিএসইউ)-এর জুড়ি ভ্যালীর সহ-সভাপতি শ্রীমতি বাউরি। “পাতাতোলার সেকশনে না আছে শৌচাগার, না আছে বিশুদ্ধ খাবার পানি। এতোসব লঙ্ঘনের অবসান কবে হবে? আশা করি এই অন্তর্র্বতী সরকার এইদিকে নজর দিবে।”

 

এছাড়া নারীকন্ঠ হিসেবে আরও বক্তব্য দেন বিসিএসইউ-এর সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার, হিজড়া অধিকার কর্মী ইভান আহমেদ কথা, এবং শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের হরিজন নারী প্রতিনিধি সুকন বাশফোড় ও বাসন্তি বাশফোড়।

আলোচনা পর্বে সম্মানিত অতিথি বিসিএসইউ-এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল চা বাগানের নারী চা শ্রমিকের অশোভন কর্মপরিবেশের বাইরে ঘরের সহিংসতার বিষয়ে বলেন, “চা বাগানে সরকারের অনুমোদিত মদের দোকান বাগানের নারীদের সহিংসতার শিকারের অন্যতম কারণ। দিনশেষে কাজ থেকে ফিরে মদ্যপ স্বামীর হাতে অনেক নারী চা শ্রমিকই সহিংসতার শিকার হন। এই মদের দোকানের লাইসেন্স অতিসত্বর বন্ধ করা উচিত।

শ্রমিকদের নিজেদের আরও সচেষ্ট হতে শ্রীমঙ্গল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর-এর উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মাদ মাহবুবুল হাসান বলেন, “শুধু দায় দিয়ে গেলে তো হবে না, আপনাদেরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনের লঙ্ঘনের দায়ে থানায় জিডি করতে পারেন, ইউনিয়ন এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন।” মালিকপক্ষের প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারেও তিনি মন্তব্য করেন, “চা বাগানের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সমস্যা নিরসনের পথ খুঁজতে হবে এবং এরকম পদক্ষেপে মালিকপক্ষের উপস্থিতি খুবই জরুরি।”

 

আলোচনা পর্বে সম্মানিত অতিথি এবং আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য দেন শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সুয়েব হোসেন চৌধুরী, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী, বিসিএসইউ-এর সভাপতি মাখনলাল কর্মকার, এবং বিসিএসইউ-এর অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি।

 

উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথার বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

 

গবেষণার উপর সরকারি পর্যায় থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিক পর্যন্ত সবার প্রচেষ্টা আরও বৃদ্ধির জন্য জোর দিয়ে সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভা সমাপ্ত করেন সেড পরিচালক।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments