Saturday, November 23, 2024
Homeসিলেট বিভাগসিলেটকাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ ছিল নারীর কোলে, অতঃপর...

কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ ছিল নারীর কোলে, অতঃপর…

 

সিলেট প্রতিনিধি,

 

নিখোঁজের সাতদিন পর বাড়ির পাশের একটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬ বছরের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের মরদেহ। সাবেক গৃহশিক্ষিকা, তার মা ও নানি তিনজন মিলেই হত্যা করেন মুনতাহাকে। হত্যার পর মরদেহ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলেন তারা। ঘটনাটি সিলেটের কানাইঘাটের।

 

রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মাটিতে পুঁতে ফেলা মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে গৃহশিক্ষিকার মাকে আটক করেন স্থানীয়রা। এ সময় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা। মুনতাহার মরদেহ উদ্ধারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

 

মুনতাহার স্বজন ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বিবি ও নানি কুতুবজান বিবিকে আটক করেছে পুলিশ।

 

স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতে গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয় পুলিশ। মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধান করেন স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময় হাতে কী জানতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে আটক করার পর তার কোলে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান। পরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

 

কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, মুনতাহার নিখোঁজের পর রোববার স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গেলে মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ মুনতাহার স্বজনদের মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কি না খোঁজ নিতে বলেন। স্থানীয়রা শনিবার রাতভর তার বাড়ির আশেপাশে কোথাও মাটিখোঁড়া কোনো জায়গা আছে কি না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগমুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধাকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখে আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্ঠা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান।

 

তিনি জানান, তারা মুনতাহার মরদেহ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন। রাতে সেখান থেকে মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলতে চেয়েছিলেন।

 

তিনি আরো জানান, মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশী ও তার গৃহশিক্ষক। একসময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানি। মার্জিয়াকে তার স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন মার্জিয়া। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। সম্প্রতি মার্জিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।

 

প্রসঙ্গত, রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments