Saturday, November 23, 2024
Homeসিলেট বিভাগবিরল প্রতিভার সন্ধান নেচে গেয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিশু সীমা আক্তার নিপা

বিরল প্রতিভার সন্ধান নেচে গেয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিশু সীমা আক্তার নিপা

দোয়ারাবাজারে বিরল প্রতিভার সন্ধান নেচে গেয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিশু সীমা আক্তার নিপা

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজলার সীমান্ত এলাকায় এক বিরল প্রতিভার শিশুর সন্ধান মিলেছে। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সীমা আক্তার শিপা (১০) নেচে গেয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। তার নৃত্যের শৈল্পিকতা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায়ও বেশ সাড়া জাগাচ্ছে। নাচ দেখিয়ে মন জয় করছে সবার। শিপা উপজেলার শহীদস্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সীমা আক্তার শিপা’র বাড়ি দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নে বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া গ্রামে। আটবছর পূর্বে তার বাবা শাহজাহান খান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে অসহায় হয়ে পড়ে। তিন সন্তান নিয়ে সংসারের হাল ধরেন মা বকুল আক্তার। অভাব অনটনের তাড়নায় একপর্যায়ে ভিটেমাটিহীন হয়ে পড়লে সম্প্রতি বাঁশতলা কলোনিতে প্রধানমন্ত্রী’র দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের কুড়ে ঘরে মাথাগোঁজার ঠাঁই হয় তাদের। তার পিতা নিখোঁজ হওয়ার পর একপ্রতিবন্ধি মেয়ে, এক শিশু পুত্র এবং সীমা আক্তার শিপাকে নিয়ে দীর্ঘসংগ্রাম অবতীর্ণ হন তার মা বকুল আক্তার। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সীমান্ত এলাকার মানুষ তার এই সংগ্রামের প্রতিদান হিসেবে বিপুল ভোটাধিক্যে তাঁকে ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেন। তিনি বর্তমানে উপজেলা’র বাংলাবাজার ইউনিয়নে ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সন্তানদের লেখাপড়ার প্রতি নজর দেন। খেয়ে না খেয়ে শিশু পুত্র এবং শিপাকে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাশাপাশি মেয়ে শিপাকে নিয়ে তিনি স্বপ্ন দেখছেন, তাঁর মেয়ে শিপা যেন এক বিরল প্রতিভার অধিকারী। যেখানেই যান শিপাকে সঙ্গে নিয়ে যান, কোনো অনুষ্ঠান কিংবা সভা হলেই সেখানে ছুটে গিয়ে সকলকে অনুরোধ করেন তাঁর মেয়ের নৃত্য দেখার জন্য।

সম্প্রতি গণমাধ্যম কর্মীরা বাঁশতলা কলোনিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পরিদর্শনে গেলে ইউপি সদস্যা বকুল আক্তার সাংবাদিকদের কাছে মেয়েকে নিয়ে উপস্থিত হন। গানের তালে তালে শিপা নৃত্য করে সকলের মন জয় করেন।

স্থানীয়রা বলেছেন সীমা আক্তার শিপা এক বিরল প্রতিভার শিশু। মাত্র দশবছর বয়সে নৃত্যে এতো ট্যালেন্ট তা কল্পনারও অতীত। প্রতিদিন বিকেলে হলে সীমান্ত এলাকায় গানের সঙ্গে নৃত্য করে মানুষের মন জয় করে চলেছে। আর্থিক সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে শিপা একদিন বড় রকমের শিল্পী হবে বলে আমরা মনে করি।

ইউপি সদস্যা বকুল আক্তার বলেন, তার বাবা নিখোঁজের পর মানুষিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী বড় মেয়ে, এক শিশু পুত্র এবং সীমা আক্তার শিপা কে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেছি। দীর্ঘদিন পর আমার এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবেসে ইউপি সদস্য হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করেন। ভিটেমাটি না থাকায় কলোনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর পাই, এখানেই আমার বৃদ্ধ মা এবং তিন সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছি। শারীরিকভাবে ভালো হওয়ায় শিপাকে নিয়ে তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল সে বড় হয়ে নৃত্য শিল্পী এবং মডেল হবে। তার বাবা নিখোঁজের পর আমি সে স্বপ্ন পুরণ করতে চাই।

সীমা আক্তার শিপা জানায়, আমি স্বপ্ন দেখি চলচ্চিত্রে একদিন কাজ করার। আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি নৃত্য শিখছি। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments