দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
দোয়ারাবাজারে প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগের নামে লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুলের হঠকারি মূলক সিদ্ধান্তে এলাকার সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। এ নিয়ে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখত অভিযোগ দিয়েছেন এক ইউপি সদস্য।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বহাল থাকা স্বত্তেও পরিষদ গঠনের তিন বছর পর প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর বিধি লঙন করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর বিধি মোতাবেক সর্বসম্মতিক্রমে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নির্বাচিত হন ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সোহেল আহমদ মিন্টু। তিন বছর ধরে এভাবেই চলছিল। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক এর পদে থেকে ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম নানা অনিয়ম দুর্ণীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন। ওই সময় প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ মিন্টুসহ পরিষদের অন্যান্য সদস্যরাও প্রতিবাদ করে আসছিলেন। এসব বিষয়ে ইতিপূর্বে পরিষদের ৯ সদস্য সম্মিলিতভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিকবার অনিয়ম দূর্ণীতির লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে। চেয়ারম্যান ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের আহ্বায়কের পদে অধিষ্ঠিত থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আওয়ামী সরকার পতনের পর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল নিজেক নিরাপদ রাখতে রাতারাতি নিয়ম বহির্ভুতভাবে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠনে মরিয়া হয়ে উঠেন।
ইউপি সদস্য সোহেল আহমদ মিন্টু জানান, ইউপি চেয়ারম্যান শুরু থেকেই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক পদে অধিষ্ঠিত থেকে নানা অনিয়ম দুর্ণীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আমরা এর বিরুদ্ধাচরণ এবং সবসময় প্রতিবাদ করে এসেছি। ইউনিয়ন পরিষদ বিধি অনুযায়ী পরিষদ গঠনের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচিত সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১, আহসান হাবীবকে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এবং হোসনে আরা বেগমকে প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ নির্বাচিত করা হয়। বিগত সরকারের আমলে অনিয়ম দুর্ণীতির বিরুদ্ধাচরণ করায় তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে আবারও প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করেছেন।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং বিধিমত পরিষদ পরিচালনা করার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা মনে করি চেয়ারম্যানের এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করে পূর্বের প্যানেল বহাল রাখবেন।
ইউপি সচিব রুহুল আমিন বলছেন, এব্যাপারে কোন বিধি আছে কি না আমার কিছুই জানা নেই। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে তা করা হয়েছে।
নতুন ঘোষিত প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলছেন, বিধি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। চেয়ারম্যান ও সচিব সাহেব এবং অন্যান্য সদস্যরা আমাকে নতুন করে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগের প্যানেল চেয়ারম্যান কোনোদিন পরিষদে আসেননি। সর্বসম্মতিক্রমে মঙ্গলবার প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বলেছেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, নতুন করে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন কোনোভাবেই বিধিসম্মত নয়। প্যানেল চেয়ারম্যান পূর্বেরটাই বহাল থাকা স্বত্তেও কেন আবার প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করবেন ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম তা জানতে চাওয়া হবে।