গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি::
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন উক্ত সংগঠনের ইউনিয়ন সভাপতি আজির উদ্দিন।
তিনি রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে আজির উদ্দিন বলেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর জাফলং জিরো পয়েন্টে ব্যাপক পাথর লুটপাট চলছিল। এমতাবস্থায় জাফলংয়ের খনিজ সম্পদ জিরো পয়েন্টের পাথর লুটপাট ঠেকাতে স্থানীয় সকল সংগঠনের নেতৃবৃন্দের নির্দেশক্রমে আমাদের ছাত্রদলের কয়েকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর থেকে আমরা অদ্যাবধি পর্যন্ত পাথর লুটপাট ঠেকাতে ৪০-৫০ জন যুবক মিলে অনেক প্রতিকূলতার ভিতর দিয়ে আমরা পাহারা দিয়ে আসছিলাম।
গত ৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কয়েকজন শ্রমিক পাথর চুরির উদ্দেশ্যে জিরো পয়েন্টে প্রবেশ করে ৪টি বারকি নৌকা দিয়ে পাথর বোঝাই করে নিয়ে আসছিল। পরে আমরা ডিউটিরত ইঞ্জিন নৌকা দিয়ে তাঁদের ধাওয়া করে পিকনিক সেন্টারের নিচে গিয়ে পাথরসহ নৌকাগুলো আটক করতে সক্ষম হই। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় কয়েকজন বড় ভাই সেখানে উপস্থিত হন। ওনাদের সামনে আমরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করি যে, তোমরা কার অনুমতিতে জিরো পয়েন্ট থেকে পাথর চুরি করে নিয়ে এসেছো? তখন তারা উত্তর দেয়, পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় জীবিকা নির্বাহের জন্য আমরা নিজেরাই পেটের দায়ে পাথর নিয়ে আসছি। তখন তাঁদের জবানবন্দি ভিডিও ধারণের মাধ্যমে রেকর্ড করে রাখা হয়।
এমন সময় লন্ডনী বাজারের কামাল ভাইসহ কিছু মানুষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওনারা দাবি করেন যে, এই পাথরগুলো নাকি জমিদার ম্যাডামের সাইটের পাথর। ওখান থেকে নাকি শ্রমিকরা চুরি করে নিয়ে আসছে। তখন আমরা কামাল ভাইকে বলি, এগুলো যদি আপনাদের জায়গার পাথর হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের জিম্মায় এদেরকে আমরা দিয়ে দিলাম। আগামীকাল ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা এর সুষ্ঠ সমাধান করে দিবেন। পাথর বোঝাই বারকি নৌকাগুলো আপাতত আপনাদের জিম্মায় রেখে দিলাম।
এ কথা বলে আমরা সবাই ওখান থেকে চলে এসেছি। এর কয়েক ঘন্টা পর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কে বা কাহারা ভুল তথ্য দিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে আটককৃত বারকি শ্রমিকদের দিয়ে মিথ্যা ভিডিও তৈরি করে আমিসহ আমার সংগঠনের সুমন শিকদার, পারভেজ শিকদার ও রুবেল আহমদের নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশ করে।
আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন বলেন, আমরা রাজনীতি করি সাধারণ মানুষের কল্যাণে। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর থেকেই মানুষের সম্পদের লুটপাটের নিরাপত্তায় এখন পর্যন্ত আমিসহ আমরা ছাত্রদলের সকল সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন যে, তামাবিল ক্যাম্প এবং কাস্টমসের লুটপাটের মালামাল উদ্ধারকাজে আমরাই সহায়তা করেছি। এমনকি এলাকায় সকল ধরনের মাদক নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করে আসছি। যা এখনও পর্যন্ত চলমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয় সহ-সভাপতি সুমন শিকদার, সহ-সভাপতি পারভেজ শিকদার ও রুবেল আহমদ।