ঝলক দত্ত, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি::
দেশের একমাত্র আগাম নবদুর্গা পূজা শুরু হয়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতী চা বাগানের মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে।
‘সারাদেশের হাজার হাজার পূজা মণ্ডপে কারিগররা যেখানে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সেখানে শ্রীমঙ্গলের মঙ্গলচন্ডী মন্দিরে ঢাকের তালে মোহিত হচ্ছে পূজা মণ্ডপ।
প্রতিবছর দুর্গাপূজার ছয়দিন আগ থেকেই এখানে আগাম নবদূর্গা পূজার শুরু হয়। প্রতিদিন একটি করে দেবী দুর্গার নয়টি রূপের পূজা করা হয়।
বৃস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতী চা বাগানের মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে দেবী দুর্গার ৯টি রূপের মধ্যে (প্রথম রূপ) শৈলপুত্রী রুপের পূজা করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে দেবীর বাকি রুপের পূজা করা হবে।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী পার্বতীর নয়টি ভিন্ন রুপ। দেবী পার্বতীর দুর্গার রুপের নয়টি রুপকে বোঝানো হয় ৷ নয় রুপ হল যথাক্রমে- শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী।
পূজার দ্বিতীয় দিন দেবী ব্রহ্মচারিণী, তৃতীয় দিন দেবী চন্দ্রঘন্টা, চতুর্থ দিন দেবী কুম্মান্ডা, পঞ্চম দিন দেবী স্কন্দমাতা, ষষ্ঠ দিন দেবী কাত্যায়নী, সপ্তম দিন দেবী কালরাত্রি, অষ্টম দিন দেবী মহাগৌরী ও দেবী সিদ্ধিদাত্রী পূজিত হবেন। এরকম পর্যায়ক্রমে ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার হতে ১২ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত চলবে দেবীর নয়টি রুপের পূজা। আগামী ১২ অক্টোবর হবে দেবীর বিসর্জন।
পূজার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, নিজের ও দেশের মঙ্গল কামনায় দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়েছেন ভক্তরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে ভক্তরা আগাম দুর্গা পূজা দেখতে এসেছেন। ’পূজা দেখতে আসা বিভা রানী ধর বলেন, ‘সাধারণত দুর্গাপূজা ষষ্টি তিথিতে শুরু হয়ে দশমীতে শেষ হয়। কিন্তু এই পূজা মন্দিরে একটু ব্যতিক্রম আয়োজন। এখানে কয়েকদিন আগেই পূজা শুরু হয়।একটু আগে ভাগেই পূজা শুরু হওয়ায় আমরা দেখতে আসছি।
তনুশ্রী দত্ত বলেন, সারাদেশে এখনো পূজা শুরু হয় নি। এখানে দুর্গা পূজা শুরু হয়ে গেছে। আমরা পরিবারের লোকজন পূজা দেখতে চলে এসেছি। মায়ের কাছে প্রার্থনা করছি আমরা যেন সবাইকে নিয়ে ভালো থাকি।’ পরিবারের সাথে আসা অরিত্র দত্ত বলেন, মায়ের সাথে পূজা দেখতে এসেছি। এখানে দ্বিতীয়বারের এসেছি পূজা দেখতে। এখানে মা দুর্গার অনেকগুলো প্রতিমা রয়েছে। দেখতে অনেক ভালো লাগছে।
শ্রীশ্রী মঙ্গলচন্ডী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিত দাশ বলেন, মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরটি এই অঞ্চলের অনেক প্রাচীন মন্দির। এই জায়গাটিতে ১৪ বছর ধরে আমরা নবদুর্গা পূজা করে আসছি। এবছর আমাদের ১৪ তম আয়োজন। এই নবদুর্গা পূজা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসেন। মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রার্থনা করি যাতে মা পৃথিবীর শান্তি প্রতিষ্ঠিত করেন, এবং দেশের মানুষ যেবো ভালো থাকে। এই মন্দিরে হাজার হাজার দর্শক সমাগম ঘটে। আমরা আশাকরি কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপন করতে পারব।