দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
গত বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মাছ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রান্তিক মাছ চাষীরা। কিন্তু এরমধ্যেই মাছ চাষীদের কাছে নতুন মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে অক্সিজেন সল্পতা। গত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরমের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিপাত হয়। আর এতেই পুকুরে বিষ ক্রিয়া তৈরি হয়ে অক্সিজেন সল্পতায় মারা গেছে অনেক পুকুরের মাছ। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই অনেকের চাষকৃত পুকুরের সব মাছই মরে ভেসে উঠেছে। হঠাৎ বড় ধরনের এমন ক্ষতিতে বিপাকে পড়েছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রান্তিক মাছ চাষিরা। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা।
উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মাছচাষী দিন ইসলাম। ৭৮০ শতাংশ জমির একটি পুকুরে বানিজ্যিকভাবে তেলাপিয়াসহ কার্পজাতীয় মাছ চাষ করেছেন তিনি। বড় মাছ বিক্রি করে পুকুরের লিজ, মাছের খাবার খরচসহ অন্যান্য ব্যয় পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিলো তাঁর। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করে অক্সিজেন সল্পতায় মারা গেছে দিন ইসলামের পুকুরের প্রায় ১ টন মাছ। সকালে ঘুম থেকে উঠে পুকুরে গিয়ে তিনি দেখেন অসংখ্য মাছ মরে ভেসে আছে। মাছচাষী দিন ইসলাম বলেন, ‘মাছ মরে যাওয়ায় লস দিয়ে ১০০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। মারা যাওয়া মাছের লোকসান কিভাবে কাটিয়ে উঠবো জানিনা।’
শুধু আলীপুর গ্রামের মাছ চাষী দিন ইসলাম-ই নয় তাঁরমতো দোয়ারাবাজার উপজেলার আরো অনেক মাছ চাষী অক্সিজেন সল্পতায় সম্প্রতি এধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। একই গ্রামের মাছ চাষী জাকির হোসেন ও রফিক মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের পুকুরের বিক্রির উপযোগী প্রায় এক মন বড় মাছ মারা গেছে অক্সিজেন সল্পতায়। তাৎক্ষনিক ভাবে অক্সিজেন ট্যাবলেট প্রয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। কিন্তু এখনো সবসময় টেনশন কাজ করে কখন জানি আবার অক্সিজেন সল্পতা দেখা দেয়!
যোগাযোগ করা হলে দোয়ারাবাজার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মন বলেন, কয়েক দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাছ চাষি আমাকে কল দিয়ে তাদের পুকুরে অক্সিজেন সল্পতায় মাছ মারা যাওয়ার খবর জানিয়েছেন। এতে মাছচাষীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আমারা তাদেরকে পুকুরের মাছের পরিমান কমানোর এবং পানি সরবরাহ বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়েছি। চাষকৃত পুকুরে পানির তুলনায় মাছের পরিমাণ বেশি থাকায় এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অক্সিজেন সল্পতার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ফলে মাছ মারা যাচ্ছে। এজন্য পুকুরে মাছ এবং পানির পরিমান ঠিক রাখতে হবে।’