নিজস্ব প্রতিবেদক,
প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। মন্দিরের গাঁথুনি করার একপর্যায়ে কাজ বন্ধ করতে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবুও প্রশাসনের বাধাকে উপেক্ষা করে কাজ চলমান রেখেছে সনাতন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকাল থেকেই মন্দির নির্মাণের জন্য উদ্দেশ্য রট, বালু, সিমেন্ট আনতে দেখা যায় তাদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের পেছনে ২৫-৩০ জন সনাতন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে কাজ মন্দির নির্মাণের গাঁথুনি কাজ করছেন শ্রমিকরা।
জানা যায়, ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মন্দির নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে পিছনে ৫০ শতক জায়গা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ১৩ বছর পার হয়ে গেলেও প্রশাসন কোনো মন্দির নির্মাণ করেনি। সেজন্য নিয়মিত প্রার্থনার সুবিধার্থে সনাতন শিক্ষার্থীদের অনুদানে এ মন্দির নির্মাণ হচ্ছে বলে জানায় তারা।
মন্দির নির্মাণ কাজে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী শান্তনু বলেন, সামনে কালী পূজাকে কেন্দ্র করে আমাদের এ মন্দির নির্মাণ করা। প্রত্যেক বছর কালীপূজা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় আমাদেরকে পূজা মণ্ডপ তৈরি করতে হয়।
এভাবে প্রত্যেক বছর পূজা মণ্ডপ তৈরি করতে গেলে আমাদের অতিরিক্ত অর্থ খরচ হয়। এখন থেকে যাতে সে অতিরিক্ত অর্থ খরচ না হয় এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে নিয়মিত এসে প্রার্থনা করতে পারে, সেজন্যই আমাদের এই মণ্ডপ তৈরি করা।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু আমাদের কাজের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাঁধা দেয়। তারা বলে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আইনি কাঠামো আছে। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এরকম কোন কাজ করা যাবে না এবং আমাদের কাজ বন্ধ করতে বলে। কাজ বন্ধের বিষয়ে আমরা প্রশাসন দুঘণ্টা সময় নিয়ে আসছি। সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা তাদের জানাব। তবে সিদ্ধান্ত নেয়া অবধি কাজ চলমান রাখবে বলে জানায় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউসি ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে অস্থায়ী ভিত্তিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনার জায়গা রয়েছে। সেখানে নিয়মিতই প্রার্থনা কর থাকেন তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বরত অধ্যাপক ড. সৈয়দ বদিউজ্জামান ফারুক বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে তারা কোনো অনুমতি নেয় নি। তাদের তাৎক্ষণিক ডাকা হয়েছে এবং মন্দির বানানোর কাজ বন্ধের জন্য বলা হয়েছে। তারা দুঘণ্টা সময় নিয়েছে। দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। কিন্তু সনাতন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রত্যুত্তর পায়নি। থানা থেকে পুলিশ এসেছে। এর মধ্যে বন্ধ না হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।