নিজস্ব প্রতিবেদক,
সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক এবং সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক এই চার মামলায় তাকে জামিন দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,আসামিপক্ষ জামিন আবেদন করলে আমরা বিরোধিতা করি। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম। সেদিন সাবেক মেয়র জি কে গৌছসহ অন্যান্য আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে শারীরিক অসুস্থতায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জরুরি কাজে ঢাকায় থাকায় উপস্থিত ছিলেন না। আদালত ১১ সেপ্টেম্বর শুনানি ও আদেশের জন্য রেখে দিয়েছিলেন। পরে বুধবার বিজ্ঞ বিচারক চারটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমরা আগামী রোববার আদালতে বেইল বন্ড জমা দেব।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। এ ঘটনায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাজনৈতিক সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সমাবেশে তখন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই বোমা হামলায় এক যুবলীগকর্মী নিহত ও ২৯ জন আহত হন। ওই ঘটনায় এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ বাবর-আরিফুল-গৌছসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
লুৎফুজ্জামান বাবর নেত্রকোণা-৪ (মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়। লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কারাগারেই রয়েছেন।