দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
স্বৈরাচার সরকারের আমলে অঢেল সম্পদ, বিলাসবহুল বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের গোপনীয় সহকারী (সিও) শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের এরুয়াখাই গ্রামের আবুল কালামের পুত্র।
নিজের এলাকার উপজেলা পরিষদে চাকুরীর সুবাদে গত পনেরো বছরে চেয়ারম্যানের একান্ত সহকারী ও দলীয় প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখিয়ে এলাকায় ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাঁর সকল অনিয়ম দূর্ণীতির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক অঢেল সম্পত্তির উৎস খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক ও সুশীল সমাজের লোকজন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা পরিষদের সিও শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগের পর এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে উপরোক্ত কথা বলেছেন, এলাকার ভুক্তভোগী জনসাধারণ।
এসময় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চকবাজারের বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, উপজেলা পরিষদের সিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুর রহমান এলাকার চিহ্নিত একজন ব্যক্তি। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তিনি এলাকায় ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
একই এলাকায় চাকুরীর সুবাদে ও উপজেলা পরিষদের সিও হওয়ায় এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের দাপট দেখিয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতনসহ চাকুরী দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গত পনেরো বছরে তিনি বিলাসবহুল বাড়িসহ অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাঁর সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।
চকবাজার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন রশীদ বলেছেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে উপজেলা পরিষদের সিও শফিকুর রহমান স্কুলে চাকুরী স্থায়ী করে দেওয়ার কথা বলে ৮ লাখ টাকা নিয়েছেন শিক্ষকদের কাছ থেকে।
পরে এমপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রভাব দেখিয়ে চাকুরী স্থায়িত্ব হয়নি। তিনি তৎকালে ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন।
এরুয়াখাই গ্রামের নূর হোসেন বলেছেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারি আমলে সিও শফিকুর রহমান সরকারি চাকুরীসহ দলীয় প্রভাব দেখিয়ে নানা অত্যাচার জুলুম আমাদের উপর করেছে।
আমি ও আমার স্ত্রী স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন যাওয়ার সব প্রস্তুতি শেষে সুইডিশ এম্বাসী থেকে তার কাছে ফোন করে আমাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের পঁচিশ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত করে।
শনিবার সকালে তাকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমার উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে আহত করে। এতে আমাদের পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এসবের সত্যতা জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের সিও শফিকুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, শনিবার সকালে সেলুনে গেলে তারা সংঘবদ্ধভাবে আমার উপর হামলা করে আমাকে বেধড়ক মারপিট করেছে। এদের সাথে আমার কোন লেনদেন নেই, অহেতুক আমাকে মারধর করে আহত করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আমি বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছি।
১ ছবির ক্যাপশন- সিও শফিকুর রহমান
২ এলাকাবাসীর সাংবাদিক সম্মেলন