নিজস্ব প্রতিবেদক,
চলতি বছরের জুন মাস থেকে কয়েক দফা বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট বিভাগ। উজানের ঢলে তলিয়েছে লোকালয়, হাওর, ফসলি জমি। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, আরও বেশ কিছু দিন থাকবে পানি। ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢোকার পাশাপাশি ডুবেছে আউশের বীজতলা। কৃষি অধিদপ্তর বলছে, এবারের বন্যায় সিলেট বিভাগে আউশ উৎপাদন কমবে। এরই মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ধান।
কৃষি অধিদপ্তর ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বন্যায় নষ্ট হয়েছে গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষেতও। এদিকে, সিলেট ও রংপুরে আরো কয়েকদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতির সতর্কতা দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে সিলেট বিভাগে ১ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে তিন দফা বন্যায় বড় ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে।
এ বিষয়ে সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খয়ের উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘২৭ হাজার ৭৮৪ হেক্টরের মধ্য ২২ হাজারেরও বেশি আউশ ও ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে।’
এর মধ্যে সিলেট ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এদিকে, সিলেট ছাড়াও মৌলভীবাজারে ৪ হাজার ৭৫৫ হেক্টর, হবিগঞ্জে ৪৬৩ এবং সুনামগঞ্জে ১ হাজার ১৩ হেক্টর জমির আউশ ধান নষ্ট হয়েছে। বন্যায় তলিয়েছে গ্রীষ্মকালীন সবজি।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হলো আউশ ধানে। সাথে সবজি ক্ষেত। গবাদি পশুর খাবারের সংকটে কৃষক । বন্যা দীর্ঘ হলে এই বিভাগে বড় বিপর্যয় হতে পারে।’
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার উপরে বইছে। তাই, সামনের কয়েকদিনে বন্যা পরিস্থিতি আরো নাজুক হতে পারে।
বন্যা ও বাঁধ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ আমীর হোসাইন বলেন, ‘এবারের বন্যার পানির উচ্চতা বেড়েছে। যা বিগত সময় থেকে একেবারে আলাদা। নদী সংযোগস্থল ভরাট, দখল ও পানি প্রবাহ বাধা সৃষ্টি করা সড়কে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে।’
আসামে ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে। তাই, উত্তরবঙ্গেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা রয়েছে।