মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি :
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আকস্মিকভাবে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কমলগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়নে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ৪-৫ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সোমবার (১ জুলাই) শেষ রাতে উপজেলার কমলগঞ্জে মুশলধারা বৃষ্টি পাত হয়। উজানে পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সকাল থেকে উপজেলার কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়।
সোমবার বিকাল ৪টায় কমলগঞ্জ থানা সংলগ্ম পুরাতন ধলাই সেতু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীর পানি অস্বাভাবিকভবে বৃদ্ধি পেয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা এলাকা দিয়ে ইসলামপুর, মাধবপুর, আদমপুর, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ পৌরসভা, মুন্সিবাজার ও রহিমপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে দীর্ঘ ৫৭ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে মনু নদী মিলিত হয়েছে ধলাই নদীতে। এর মধ্যে অসংখ্য স্থানে আঁকা-বাঁকা হয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এসব ইউনিয়নের ৪-৫টা স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজরদারি আছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কমলগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে এ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীর ৫৭ কি.মি. এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ আছে। তার আগেও নদীর বাধ ভেঙ্গে পানি ডুকে বন্যায় পরিনত হয়। ফলে কৃষি ও বসতঘরের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদি এখন আবার ভাঙ্গে তাহলে আমরা মারাই যাবো। এখন আবার এভাবে পানি বাড়তে থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিরক্ষা বাঁধের যে কোন স্থান ভেঙ্গে যেতে পারে। এছাড়াও আগের বাধগুলো এখনো কাজ হয়নি।যদি পানি বাড়তে থাকে তাহলে আগের বাধঁগুলোতে পানি ডুকবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পর্যবেক্ষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় বেশী বৃষ্টি হওয়ায় রবিবার রাত থেকে কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, তবে এখন বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি। তিনি বলেন বিকাল ৩টার সময় আমরা একটা রিডিং নিয়েছিলাম তখন ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত ছিল। তবে দুপুর ১২টার রিডিং এ দেখা যায় ৫ ফিট পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টা আবার রিডিং নেওয়া হবে। তবে পানি বাড়ছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘রবিবার সকাল থেকে ধলাই নদীর আকস্মিক পানি বেড়ে গেছে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন ধলাই নদীর পানি প্রবাহের দিকে নজরদারি করছে বলেও তিনি জানান।’