Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
বন্যার পানি কমছে, রোগবালাই বাড়ছে - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Friday, April 18, 2025
Homeসিলেট বিভাগমৌলভীবাজারবন্যার পানি কমছে, রোগবালাই বাড়ছে

বন্যার পানি কমছে, রোগবালাই বাড়ছে

বিশেষ প্রতিনিধি,

 

দেশের বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে পানি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। দূষিত পানি পান ও বন্যার পানিতে চলাফেরার কারণে এ ধরনের রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও চোখের প্রদাহের রোগীর সংখ্যাই বেশি। তবে সিলেট বিভাগের কোনো জেলায় এখন পর্যন্ত পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক নয়। আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

 

সিলেট : সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মে সিলেটে প্রথম দফা বন্যার পর থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৮১৩ জন।

 

 

এর মধ্যে চর্মরোগে ৯৫ জন, ডায়রিয়ায় ৫৮ জন, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ৬৮ জন, চোখের প্রদাহে পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছে। বাকিরা ভুগছে অন্যান্য পানিবাহিত রোগে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের এই পরিসংখ্যান শুধু সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ক্লিনিকে চিকিত্সা নিতে আসা রোগীদের নিয়ে। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।

 

 

কারণ অনেক এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ায় রোগীদের পক্ষে হাসপাতাল পর্যন্ত আসা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতাল পর্যন্ত আসে না, ঘরেই চিকিত্সা নেয়। ফলে প্রকৃত চিত্র জানা কঠিন।

১৩ উপজেলাজুড়ে বন্যার বিপরীতে রোগীর এই সংখ্যা কম কি না—এমন প্রশ্নে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা।

 

কারণ অনেকে চিকিত্সা নিতে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে না।

বন্যা আক্রান্তদের সেবা দিতে ১৩৯টি টিম কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক নয়, নিয়ন্ত্রণেই আছে।’

 

সুনামগঞ্জ : বানভাসিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১০১টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানায়। সিভিল সার্জন কার্যালয়ও প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১০১টি টিম গঠনের কথা নিশ্চিত করেছে। তবে এসব টিমের প্রদত্ত সেবার কোনো পরিসংখ্যান দিতে পারেনি তারা।

 

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কালিপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমার নাতি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। চারদিকে পানি, নৌকা নেই। আমরা শুনেছিলাম মেডিক্যাল টিম এসে সেবা দেবে। কিন্তু তাদের জন্য অপেক্ষা করেও পাইনি। পরের দিন আমি নৌকা জোগাড় করে হাসপাতালে নিয়ে গেছি।’

 

মোহনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এখন অনেক মানুষের চর্মরোগ ও পেটের পীড়া দেখা দিচ্ছে। কিন্তু ইউনিয়নের কোথাও মেডিক্যাল টিমকে সেবা দিতে দেখিনি। রোগীরা স্থানীয় বাজার থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছে।’

 

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহমদ হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল টিমগুলো গঠন করা হয়েছে। তবে আমরা ব্যানার-সাইনবোর্ড নিয়ে কর্মসূচি না চালানোয় লোকজন আমাদের দেখতে পারেনি।’

বন্যাকবলিতদের কতজনকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই পরিসংখ্যান করিনি আমরা।’

 

মৌলভীবাজার : বন্যায় জেলার ৪৯টি ইউনিয়নের নলকূপ ও ভাসমান শৌচাগার তলিয়ে যায়। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৮০২ জন।

 

বন্যাদুর্গত এলাকায় বানভাসিদের চিকিত্সাসেবা দিতে মৌলভীবাজার জেলায় ৭৪টি মেডিক্যাল টিম করা হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা বানভাসিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

জুড়ি উপজেলায় হাকালুকি হাওরপারের বাসিন্দা রহিমা খাতুন (৪৫) জানান, এখনো বন্যার পানির ভেতরেই তাঁদের চলাচল করতে হচ্ছে। এতে তাঁর হাতে-পায়ে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। গ্রামের সব পরিবারেই কোনো না কোনো রোগ দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি।

 

হাওর এলাকায় এখনো কোনো স্বাস্থ্যকর্মী আসেননি বলে অভিযোগ করে বানভাসি মানুষ। রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি এলাকার সুরুজ মিয়া বলেন, ‘আমার নাতি সুমন মিয়া (৮) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। বাড়িতেই চিকিত্সা চলছে।’

 

সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, ‘জেলায় ৬৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবাহিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা নৌকায় করে বানভাসিদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments