বিশেষ প্রতিনিধি,
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার থানা বাজার ব্রিজ থেকে ইঞ্জিন নৌকায় ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিলে দেখা মেলে শিমুলতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের। উপজেলাবাসীর কাছে শিমুলতলা অনেকটা বন্যার পানির উচ্চতা নির্ণায়ক। ভারি বৃষ্টি কিংবা পাহাড়ি ঢল হলেই অনেকে খোঁজ নেন এখানের অবস্থা কী। এই গ্রাম ডুবেছে মানে পানি ‘বিপত্সীমা’ অতিক্রম করছে।
এটা দেখে সবাই সাবধান হয়।
সেই শিমুলতলা গ্রাম গত ২৪ বছরে অন্তত অর্ধশতবার বন্যাকবলিত হয়েছে। এবারও দুই দফা পানিতে ডুবেছে, এখনো বাড়িগুলোর উঠানে হাঁটুর ওপরে পানি। এখানকার বাসিন্দা ফরমান আলী (৩২) নিজের ঘরের সামনে নৌকায় বসেছিলেন।
তিনি বললেন, ‘ঈদের আগের রাতে আমরা ঘুমে ছিলাম। হঠাত্ মাঝরাতে জেগে দেখি বিছানায় পানি লেগে গেছে। নৌকা নাই, মেঘবৃষ্টির শব্দে কাউকে ডাকলেও শুনে না। ঘরে রশি ছিল।
তা দিয়ে চৌকিটা চালের সঙ্গে ঝুলিয়ে তাতে কোনোমতে রাত কেটেছে।’
গ্রামের মুদি দোকানি ষাটোর্ধ্ব আব্দুর রউফ বলেন, ‘তুলনামূলক নিচু এলাকা হওয়ায় সবার আগে আমাদের গ্রাম ডুবে। এমনও গেছে, এক বছরে তিন-চারবারও বন্যাকবলিত হয়েছি।’
তিনি জানান, গ্রামের ১৪৬ ঘরের কারোর দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কারো ভিটার মাটি সরে গেছে। এ রকম প্রতিবছরই হয়।
পানি নামলে সীমিত আয় দিয়ে ঘর মেরামত করাই তাদের বড় চ্যালেঞ্জ।
গ্রামের একমাত্র বিদ্যালয়টি ডুবে আছে পানিতে। এক মাসের ওপর পাঠদান বন্ধ। গ্রামবাসী জানায়, ২৪ বছরেও স্কুলটি সরকারি হয়নি। পড়াশোনাও তেমন ভালো মানের নয়। তাঁদের সন্তানরা তাই যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।