রকিবুল ইসলাম রকি, মৌলভীবাজার::
মৌলভীবাজার জেলায় মনুসহ বেশ কয়েকটি ছোট বড় নদী রয়েছে যেখানে প্রতিবছরই ওই সব নদীর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় এমন ব্যক্তির সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু এ জেলায় ডুবুরী না থাকায় যাদের মৃত্যু হয় তাদের অনেকের মরদেহ পর্যন্ত সম্ভব হয় না। আবার কারো কারো মরদেহ উদ্ধার হয় দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর। যা লাশ শনাক্তেও পরিবার স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আবার কারো মৃতদেহ পর্যন্ত উদ্ধার হয়না। যে কারনে তাদের পরিবার স্বজনদের মাঝে দিনের পর দিন চলে নিরব আহাজারি। এদিকে মৌলভীবাজারেরর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঢাল তলোয়ার ছাড়াই ডুবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষের উদ্ধারের চেষ্টা করে এবং অপেক্ষা করতে থাকেন কখন সিলেট থেকে ডুবুরি আসবে।
যদিও সিলেট থেকে ডুবুরি এসে মৌলভীবাজারে পৌঁছাতে সময় লাগে ২/৩ ঘন্টা। ততক্ষণে ডুবন্ত ব্যক্তি নদীর স্রোতে তলিয়ে যায়। কখনো বা তাকে খুঁজতে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ডুবুরীদের পানির তলদেশে তল্লাসী চালাতে হয়। এতে একদিকে যেমন দীর্ঘ সময় অতিবাহীত হয় অন্য দিকে নিখোঁজ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধারের আশংকা ততটাই হতশায়-দুশ্চিন্তায় পরিণত হতে থাকে। কখনো কখনো ডুবে যাওয়া নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে বা অনেককে খুঁজে না পেয়ে উদ্ধার কাজের সমাপ্তি ঘোষণা দেয়া হয়।
শনিবার (২২জুন) দুপুরের দিকে মৌলভীবাজার শহরের সুইচ গেইট এলাকায় গোসল করতে গিয়ে রিমন নামের এক দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়, পরবর্তীতে তাকে উদ্ধারে সিলেট থেকে ডুবুরি দল আসে বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যার দিকে, তারা অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে ফিরে যায়। এদিকে সে নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পার হলেও এখনো মেলেনি তার জীবিত কিংবা মরদেহ যার ফলে, কিছুতেই কমছে না নিখোঁজ রিমনের অন্ধ বাবা এবং বৃদ্ধ মায়ের আহাজারি। সকলের কাছে তাদের একটাই আবদার তাদের ছেলে রিমনের জীবিত বা মৃতদেহ তাদের কাছে এনে দেওয়ার।
মৌলভীবাজার ফায়ার স্টেশনের উপ- সহপরিচালক মো: আলাউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আজকে এই বিষয় নিয়ে একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে আমাকে বলা হয়েছে ডি.সি মহোদয়ের রেফারেন্স নিয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের বরাবর আবেদন করতে, আমি সবগুলো অপারেশনের ডকুমেন্ট রেডি করে এটি জমা দিবো। আশাকরি এটির মাধ্যমে অতিদ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড.উর্মি বিনতে সালাম জানান, মৌলভীবাজারে বেশ কিছু নদ- নদী থাকায় প্রতিনিয়তই পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তবে মৌলভীবাজার জেলায় কোনো ডুবুরি টিম না থাকায় অনেক সময় অনেক পরিবারের কাছে তাদের প্রিয়জনের লাশ পৌছে দেওয়া সম্ভব হয় না, আমরা আজকে একটি কমিটি গঠন করেছি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাবর আবেদন করেছি, অতিদ্রুতই এই বিষয় টির সমাধান হবে বলে আশাবাদী।