Friday, November 8, 2024
Homeখেলাধুলাক্রিকেটবাংলাদেশের ব্যাটিং মানেই ডট আর ডট

বাংলাদেশের ব্যাটিং মানেই ডট আর ডট

 

ক্রীড়া প্রতিবেদক,

 

তাঁর দায়িত্ব বোলিং। কিন্তু সহঅধিনায়ক যেহেতু হয়েছেন, দলের সবদিক নিয়েই কথা বলতে হয় তাসকিন আহমেদকে। গতকাল সংবাদসম্মেলনে এসে তাই দলের ব্যাটিং নিয়ে অনেক কথা বলতে হয়েছে ডানহাতি ফাস্ট বোলারকে।

 

বোলারদের জন্য লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তাসকিন। আর সে জন্য একটি পরামর্শও দিয়েছেন, ‘যদি আগে ব্যাট করি, ভালো হবে যদি ডট বলের সংখ্যা কম হয়।’

 

এই পরামর্শ দেওয়াটা স্বাভাবিক। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যান্টিগার ব্যাটিং উইকেটেও বাংলাদেশ মাত্র ১৪০ রান তুলেছে। এ রান এসেছে ৬৯ বল থেকে। কারণ, বাকি ৫১ বলে কোনো রান নিতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

 

এমন না যে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত বোলিং লাইনআপ বলেই এতটা কাবু হয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে প্রতিটা ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা স্ট্রাইক বদলাতে ধুঁকছেন। নেপালের বিপক্ষে ইনিংসের ৩ বল আগে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। সে ম্যাচেও ৬৪টি ডট বল ছিল।

 

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো ব্যাট করেছিল। সাকিব আল হাসানের ফিফটি সেদিন ১৫৯ রান এনে দিয়েছিল। অথচ সে ম্যাচেও বাংলাদেশ ৫১টি ডট বল দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউইয়র্কের কঠিন উইকেটে ছিল ৬৬টি ডট বল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯ ওভারেই ৫৭টি ডট ছিল। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ২৮৯টি ডট দিয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ, ৪৯ ভাগ বলেই রান নিতে ব্যর্থ লিটন-শান্তরা।

 

সমস্যাটা টপ অর্ডারেই বেশি। প্রথম ম্যাচে ২ বলে ০ করার পর থেকে সুযোগ মিলেনি সৌম্য সরকারের। তানজিদ হাসান তামিম ৫ ম্যাচে ৫৭ রান করার পথে ৪৫ বল খেলেছেন। এর মধ্যে ২৭টি বলই ডট।

 

তাঁর দুই সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের অবস্থাও ভালো না। শান্ত ৮০ বলের ৪৩টি বলেই কোনো রান নিতে পারেননি। লিটনের ক্ষেত্রে সেটা ৯০ এ ৫০!

মিডল অর্ডারে একটু স্বস্তি। সাকিব আল হাসান সে তুলনায় আদর্শ। ৩৬% ডট তাঁর। হৃদয়ও বেশ ভালো করছেন, ৪০.৩৮% ডট বল তাঁর। ইনিংসের বাকি সময়ে চার-ছয় মেরে স্ট্রাইকরেটও ধরে রেখেছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রে ডটের সংখ্যা ৪৬.৭৫%। দলের অন্যদের কথা চিন্তা করলে খারাপ না। কিন্তু একজন ফিনিশারে ভূমিকা পাওয়া ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে অঙ্কটা একটু প্রশ্নের জন্ম দেয়।

 

টি-টোয়েন্টিতে ৪০% ডট বল অনেক ভালো ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। কিন্তু তাঁরা বাকি সময়ে চার-ছক্কায় সেটা পুষিয়ে দেন। হৃদয় যেমনটা করার চেষ্টা করছেন। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সবাই স্বীকার করে নেন, তাঁরা বিগ হিটার নন। তাঁদের আগে উইকেটে থিতু হতে হয়। এমন ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে ডট বলের পরিমাণ কম হওয়াটা জরুরি।

 

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সাকিব যা করেছিলেন। ক্ষেত্রে সে ম্যাচে ৪৬ বলের ইনিংসে মাত্র ১২টি ডট ছিল সাকিবের। অর্থাৎ প্রায় ২৫ ভাগ বল ডট। এ কারণেই ৯ চারে সেদিন ৬৪ রান করতে পেরেছিলেন সাকিব। আর বাংলাদেশও ১৫৯ রানের পুঁজি পেয়েছিল।

 

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও সে চেষ্টা করেছিলেন। ১০ বলে মাত্র ৩টি ডট দেওয়া সাকিব অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ওদিকে শান্ত ও লিটন দুজনে মিলে ইনিংসের অর্ধেক বল ব্যবহার করলেও ৩২টি বল ডট দিয়েছেন। আর এ কারণেই শেষ দিকে হৃদয়ে ২৮ বলে ৪০ রানের পরও বাংলাদেশ মাত্র ১৪০ রান তুলেছে।

 

আজ ভারতের বিপক্ষে তাই বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের মূল মন্ত্র হবে- ডটকে বলুন নট।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments