জেলা প্রতিনিধি,
বৃষ্টিপাত কমে আসায় সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। নগরীর প্লাবিত এলাকার পানিও নেমেছে।
শনিবার সকালে সুরমা নদীর পানি সিলেট শহর পয়েন্টে কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কোথাও কোথাও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত মাত্র দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান।
তিনি বলেন, “আরও দু-একদিন বৃষ্টিপাত হতে পারে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, “বৃষ্টিপাত না হওয়াতে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিলেটে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমাদের ভয়টা কাটছে না।”
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, নগরীর প্লাবিত ওয়ার্ডগুলোর বেশির ভাগ স্থান থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। কয়েকটি ওয়ার্ডের কিছু স্থানে পানি রয়েছে। নগরীর আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজন বাসা-বাড়িতে যাচ্ছেন। আর যাদের বাসার পানি নামেনি তারা রয়েছেন।
আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যার্তদের মধ্যে রান্না করা ও শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
পাউবো সিলেট কার্যালয় জানায়, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে শনিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।
সুরমা নদীর পানি সিলেট শহর পয়েন্টে শনিবার সকালে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে; সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।
শনিবার সকাল ৯টায় কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি প্রবাহ অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায়ও একই মাত্রায় প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে শুক্রবারের তুলনায় আরও কমেছে। সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এ ছাড়া শনিবার লোভা, সারি, ডাউকি, সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদীর পানিও কমেছে।
শুক্রবার রাতে সিলেট জেলা প্রশাসনের বন্যা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩টি ও জেলার চারটি পৌরসভাসহ ১২০টি ইউনিয়ন প্লাবিত রয়েছে। জেলার ১ হাজার ৪৯৮টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে।
জেলার ৩৬৬ আশ্রয়কেন্দ্রে ২৫ হাজার ২৭৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যাদুর্গত এলাকায় ৯ লাখ ৭৮ হাজার ২২৩ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।