স্টাফ রিপোর্টার,
সারাদেশে চলছে ঈদের আমেজ অন্যদিকে সুনামগঞ্জের বানের পানিতে মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে একটু নিরাপদ আশ্রয়। কেউ জায়গা খুঁজছেন প্রতিবেশীর দোতলা ছাদে আর কেউ কেউ যাচ্ছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। কথা ছিল সবাই একসাথে কোরবানি দেওয়ার।
কিন্তু সোমবার (১৭ জুন) ভোররাতেই পানি প্রবেশ করে শহরতলীর বড়পাড়া, নতুনপাড়া, বাধনপাড়া, মরাটিলা শান্তিবাগ, কাজীরপয়েন্ট, উত্তর আরপিননগর, সাহেববাড়ি ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায়। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও কোরবানি দিতে পারেনি অনেকে।
তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা নোমান রহমান বলেন, আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন, আমরা আজকেও গরু কোরবানি দিতে পারিনি। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। একটু শুকনো জায়গার অভাবে এখনো কোরবানি দেওয়া হয়নি।
একই অবস্থায় আছেন বড়পাড়া এলাকার শফিক আহমদ। তিনি সিলেটের কাগজ কে বলেন, ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাসায় পানি ছুঁই ছুঁই। ভেবেছিলাম পানি কমে যাবে, কিন্তু কমে নি। এখনো গরু কাটা হয়নি। যে অবস্থা শুরু হয়েছে। কোরবানি দিতে পারব কি না বুঝতে পারছি না।
বালু পাথর ব্যাবসায়ী শুভ বলেন, এবার কোরবানির জন্য ৩টা গরু কিনেছি। পানি বাড়ার কারণে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছি। ভাবছি গরু কেটে এলাকায় বিলিয়ে দেব।
টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। জেলা শহরসহ, মধ্যনগর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতকের স্থানীয় সড়ক তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গা ভাঙতে শুরু করেছে। প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, স্বল্পমেয়াদী বন্যা চলছে। এই বন্যা স্থায়ী হবে না বেশিদিন। বৃষ্টিপাত কমলে পানি নেমে যাবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষের জন্য শুকনা খাবারের পাশাপাশি গরুর গোখাদ্য ও নৌকা প্রস্তুত আছে।