Sunday, November 24, 2024
Homeইসলামলাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

বিশেষ প্রতিবেদন,

 

আজ পবিত্র হজ। ৯ জিলহজ ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে হয়। হাদিসের ভাষায়- আল-হাজ্জু আরাফাহ অর্থাৎ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়াই হজ। এ যে বিশ্ব মুসলিমের সম্মিলন স্থল বা মিলনমেলা।

লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফার পথে হাজিরা।তাওবাহ-ইসতেগফার, তাকবির ও তালবিয়ায় মুখরিত থাকবে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দান। হজে অংশগ্রহণকারীরা এক সামিয়ানায় সমবেত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।

পাঁচ দিনব্যাপী পবিত্র হজের প্রধান আনুষ্ঠানিকতার এই দিনে তালবিয়া তথা ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ (আমি উপস্থিত হয়েছি হে আল্লাহ, আমি উপস্থিত হয়েছি তোমার সমীপে, তোমার কোনো শরিক নেই, পুনরায় আমি উপস্থিত হয়েছি, নিশ্চয়ই সব প্রশংসা ও সকল নিয়ামত শুধু তোমারই জন্য, সব সাম্রাজ্যও তোমার এবং তোমার কোনো শরিক নেই) ধ্বনিতে গোটা আরাফাত ময়দান প্রকম্পিত হচ্ছে।

দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমত প্রাপ্তি ও নিজেদের গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফরিয়াদ জানাবে সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমান। সংখ্যায় অল্প হলেও মহামারি করোনার এ সময়েও বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এক অনুপম দৃশ্যের অবতারণা হচ্ছে আজ আরাফাতের ময়দানে।শনিবার (সৌদি আরবে ৯ জিলহজ) মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে আসা মুসলমানরা হজের দ্বিতীয় রুকন আদায়ের জন্য সূর্যোদয়ের পর মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন।

সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিদায় হজের স্মৃতিবিজড়িত এই ময়দানের চারদিকে হলুদ বোর্ড দিয়ে চিহ্নিত এলাকার ভেতরে অবস্থান করবেন হাজিরা। এখানেই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।হাজিরা সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছু সময় পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাত ময়দান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

মুজদালিফায় গিয়ে এশার নামাজের সময় একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায়ের পর তাঁরা সেখানেই বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে রাত যাপন করবেন।রাতে প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য সেখান থেকে ৭০টি পাথর সংগ্রহ করবেন। সুবহে সাদিক পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ।

হাজিরা আগামীকাল রোববার ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় মুজদালিফায় অবস্থান করবেন। এর পর তারা মুজদালিফা থেকে মিনায় যাবেন।

সেখানে মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোড়ার স্থান) বড় শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি এবং রাসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শ অনুসরণে পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন।

নারীরা চুলের অগ্রভাগ থেকে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটবেন। এর পর হাজিরা সেলাইবিহীন ইহরাম খুলবেন; পশু কোরবানি দেবেন।

এর পর হাজিরা হজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ রুকন আদায়ের জন্য মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবহে সাদিকের পর থেকে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন।কাবা শরিফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাঈ’ (দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার ফিরে যাবেন মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে।

হজযাত্রীরা ১১ জিলহজ আবার মিনার জামারায় গিয়ে জোহরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। একইভাবে ১২ জিলহজ আবারও ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে তারা মিনা ত্যাগ করবেন। ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে কাবা শরিফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments