Saturday, November 23, 2024
Homeইসলামহজ ফরজ হলেও আদায় না করলে পাপ হবে?

হজ ফরজ হলেও আদায় না করলে পাপ হবে?

ইসলামী জীবন,

প্রতীকী ছবি

হজ ফরজ হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আদায় করা উচিত। যে বছর ফরজ হয়েছে সে বছরই আদায় করা ওয়াজিব। দেরি করা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।

 

 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করার ইচ্ছা করে, সে যেন তাড়াতাড়ি আদায় করে নেয়। কারণ যেকোনো সময় সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে বা বাহনের ব্যবস্থাও না থাকতে পারে; অথবা অন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।’

 

(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৮৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৭৩২)

 

 

অনেকে মনে করেন ছেলে-মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হয়ে গেছে, তাদের বিয়ে না করিয়ে হজ করবো না। আবার অনেকে বাড়ি-ঘর তৈরি করার অজুহাতে হজ পালনে দেরি করেন। অথচ বাড়ি-ঘর তৈরি বা সন্তানের বিবাহের কারণে হজ পালনে বিলম্ব করা কোনো গ্রহণযোগ্য কারণ হতে পারে না।

 

অনেকে আবার শেষ বয়সে হজ করার চিন্তা করেন। এমন চিন্তাও ভুল। কারণ, যুবক বয়সেই হজ আদায় করা সহজ এবং এ সময় হজের বিধানগুলো ভালোভাবে আদায় করা সম্ভব।

 

 

এক হাদিসে ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, ‘ফরজ হজ আদায়ে তোমরা বিলম্ব কোরো না। কারণ তোমাদের কারো জানা নেই তোমাদের পরবর্তী জীবনে কী ঘটবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৮৬৭; সুনানে কুবরা বায়হাকি : ৪/৩৪০)

 

কারো ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর অলসতাবশত বিলম্ব করলে এবং পরে গরিব হয়ে গেলে বা শক্তিহীন হয়ে গেলে ওই ফরজ বিধান তার জিম্মায় থেকে যাবে, মাফ হবে না। যেকোনো উপায়ে হজ আদায় করতে হবে অথবা মৃত্যুর আগে বদলি হজ আদায়ের ওসিয়ত করে যেতে হবে।

 

অনেকের মাঝে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, মা-বাবা হজ আদায়ের আগে সন্তান হজ করতে পারবে না। এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ, মা-বাবা সন্তান সবার ফরজ বিধান একান্ত তার নিজের। তাই এমন ধারণার কারণে দেরিতে হজ পালনের অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়।

 

যে ব্যক্তি হজ ফরজ হওয়ার পরও হজ না করে মৃত্যুবরণ করে তার সম্পর্কে হাদিসে কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। এমন ব্যক্তি সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে ইহুদি হয়ে মরুক বা নাসারা হয়ে মরুক (আল্লাহ তায়ালার এতে কিছু আসে যায় না।)

 

এক হাদিসে হজরত উমামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, কোনো জরুরি প্রয়োজন, জালেম সরকারের বাধা বা কঠিন রোগ-ব্যাধির কারণ ছাড়া যদি কেউ (হজ ফরজ হওয়ার পরও) হজ না করে মারা যায়, তাহলে সে যেন ইহুদি বা খৃষ্টান হয়ে মারা যায়। (দারেমি, হাদিস : ১৮২৬; বায়হাকি, হাদিস : ৩৬৯৩)

 

অপর এক হাদিসে আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আমার বান্দার শরীরকে সুস্থ রাখলাম, তার রিজিক ও আয়-উপার্জনে প্রশস্ততা দান করলাম। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও যদি সে আমার ঘরের হজের উদ্দেশ্যে আগমন না করে তাহলে সে হতভাগ্য, বঞ্চিত।’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩৬৯৫; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস : ১০৩১; তবারানি, হাদিস : ৪৯০)।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments