স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে নবীগঞ্জের পশুরহাটগুলো। ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের অন্যতম বৃহৎ পশুরহাট বসেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজারে। ইতিমধ্যে পুরোধমে জমে উঠেছে মহাসড়কের উভয় পাশে বসা এই পশুর হাট। বাজারে রয়েছে দেশীয় গরুর চাহিদা। মহাসড়কের পাশে পশুরহাট হওয়ায় যানজটে যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই। গত শনিবার উপজেলার জনতার বাজার পশুর হাটে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাযায়- প্রতি শনিবার নবীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে বসে জনতার বাজারে পশুর হাট। মামলা সংক্রান্ত আইনি জটিলতার কারণে ইজারা না দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসিল আদায় করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়- গত শনিবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে জনতার বাজারে পশুর হাটে প্রায় অর্ধলক্ষ গরু ছাগল উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতারও উপচে পড়া ভিড় ছিল। জনতার বাজার পশুর হাটের পূর্ব ও পশ্চিম অংশে বিপুলসংখ্যক পশু থাকায় বাজারে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। অনেকেই বাজারে জায়গা না পেয়ে গরু নিয়ে বসে পড়েন মহাসড়কে ফলে জনসাধারণের উপচে পড়া ভিড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও বাজারের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন দেলোয়ারের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. মাসুক আলীসহ পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
এদিকে, ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ছোঁয়ায় আরো একধাপ এগিয়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। অনেকেই স্মার্ট ফোনে হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, স্কাইপিসহ বিভিন্ন অ্যাপ এর মাধ্যমে ভিডিও কলে বিদেশে অথবা বাড়িতে থাকা লোকজনকে গরু দেখাচ্ছেন এবং তারা ভিডিও কলে গরু দেখে দেখে পছন্দ করছেন কোনটা কিনবেন। এ ছাড়াও অনেকেই গরুর ছবি তুলে হোয়াটস আপের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের শেয়ার করছেন। তবে জাল নোট সনাক্ত করণে কোনো বুথ দেখা যায়নি।
দেবপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম কালাম বলেন- বাজারে এসেছিলাম গরু কিনতে, বাজারে কাদামাটি, বাজারে দেখাশুনোর যেন কেউ নেই ! গরুর দাম কিছুটা সহনশীল পর্যায়ে আছে, আমি একটি বড় গরু ক্রয় করেছি। সাতাইহাল গ্রামের শাহ ওমর আলী বলেন- গরু কিনতে বাজারে এসেছিলাম, আমি ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে গরু ক্রয় করেছি, আমি আমার পছন্দের গরু কিনে আনন্দিত। বানিয়াচং থেকে আসা সুজন মিয়া নামের এক ব্যবসায়ী জানান- বাজারে ৩৫টি দেশী গরু নিয়ে এসেছিলাম, ৬টি গরু বিক্রি করেছি, বাজারে দেশীয় গরুর চাহিদা অনেক বেশি।
বাহুবলের আবুল কালাম বলেন- ১২টি গরু নিয়ে জনতার বাজার পশুর হাটে এসেছি, এরমধ্যে ৬টি গরু বিক্রি করেছি, পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রাহক বাজারে আছে, দাম ধর হচ্ছে। আগামী বাজারে অবশিষ্ট গরু বিক্রি করতে পারবো।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ বলেন- পশুরহাটকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সু-শৃঙ্খলভাবে হাসিল আদায় করা হচ্ছে, মহাসড়কে যাতে কোনো ভাবেই পশুর হাট বসতে না পারে এ জন্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা তৎপর রয়েছে।