Friday, November 8, 2024
Homeসিলেট বিভাগসিলেটনিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে মানুষ, বন্যায় দিশেহারা কানাইঘাটবাসী

নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে মানুষ, বন্যায় দিশেহারা কানাইঘাটবাসী

বিশেষ প্রতিনিধি,

 

সিলেটে আকস্মিক বন্যায় দিশেহারা হয়ে উঠেছে মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটছে মানুষ। ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বেশির ভাগ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অনেক সড়ক ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

 

আকস্মিক বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছেন কানাইঘাট উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। পরিবার-পরিজন, গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। পানিবন্দি মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছেন।

 

 

সুরমা ও লোভা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বিভিন্ন এলাকায় ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার কারণে কানাইঘাট উপজেলার ল²ীপ্রসাদ পূর্ব, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, দিঘীরপাড় পূর্ব, বড়চতুল, সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার সমস্ত জনপদ ও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে হাটুপানি থেকে কোমর পানি বিরাজ করছে। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

 

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকেল ৩টার দিকে তা কমে ১৪৩ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি ডাইকের উপর দিয়ে ও ভাঙন দিয়ে প্রবেশ করায় গোটা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপধারণ করেছে।

 

 

সুরমা ও লোভা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বিভিন্ন এলাকায় সুরমা ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার কারনে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, দিঘীরপাড় পূর্ব, বড়চতুল, সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার সমস্ত জনপদ, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। শত শত বাড়ি-ঘর হাটুপানি থেকে কোমর পানি বিরাজ করছে। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

 

অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য। মনিটরিং সেল খুলে মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের জন্য প্রচার করা হয়।

 

বুধবার রাত থেকে পানবন্দি অবস্থায় থাকা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির লোকজন নৌকা ও কলাগাছের বেলায় চড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে থাকেন। কয়েকশ নারী-পুরুষ, শিশু, স্থানীয় স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান নিয়েছেন।

পানি বেড়ে যাওয়ার কারনে কানাইঘাট-দরবস্ত সড়ক, গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক, কানাইকানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক ও কানাইঘাট-শাহবাগ।সড়কের নিচু এলাকা দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সিলেটের সাথে উপজোলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন অবস্থায় রয়েছে।

 

 

লোকালয়সহ বিস্তৃর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শত শত মৎস্য খামার ও সবজি বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

 

 

অনেক বয়স্ক লোকজন জানিয়েছেন বিগত দিনে তারা এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি কখনো দেখেনি। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যাকে ছাড়িয়ে গেছে এবারে বন্যা।

 

 

যেসব এলাকায় কখনে বন্যার পানব প্রবেশ করেনি, সেসব এলাকায় এবার বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।

অনেকে তাদের গৃহপালিত গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন মারাত্মক বিপাকে। কেউ কেউ তাদের গবাদি পশু উচু স্থানে সরিয়ে নিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে পশুগুলো পানির মধ্যে রয়েছে।

 

একদিকে ভয়াবহ বন্যা অপরদিকে বৈরি আবহাওয়া ও ঝড়বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দী এলাকার মানুষজন আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।

 

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ডাইক ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments