জালাল উদ্দিন লস্কর ,হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি,
হিসাব চাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ হোসেন কে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে পিটিয়েছেন মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষক ফরাশ উদ্দিন। এই ঘটনার পর ১৫ দিন পার হয়েছে। তবে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও থানায় সাধারণ ডায়েরী করেও গত ১৫ দিনে কোনো প্রতিকার পান নি ভুক্তভোগী ফরিদ হোসেন।
জানা গেছে,মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরাশ উদ্দিন চাকুরীর মেয়াদ পূর্ন হওয়ার কারনে গত ২৮ জানুয়ারী অবসর গ্রহন করেন।পরদিন ২৯ জানুয়ারী বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সিনিয়র শিক্ষক ফরিদ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব প্রধান করে।
দায়িত্ব গ্রহনের পর নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট,আর্থিক লেনদেনের হিসাব বিবরণী ও পাসওয়ার্ড ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে সমজানোর কথা থাকলেও অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষক ফরাশ উদ্দিন এসব দিতে গড়িমসি শুরু করেন।
‘সময় হলে দিবেন’ এমন কথা বলে কালক্ষেপন করতে থাকেন।একপর্যায়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী অসহায় ফরিদ হোসেন নিজের অসহায়ত্ব ও অক্ষমতার কথা উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে লিখিতভাবে অব্যাহতি চান প্রতিষ্টানটির সভাপতির কাছে। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি চার্জ লিস্ট সহ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ফরাশ উদ্দিনের একগুয়েমির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে নি।ফরিদ হোসেনকেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অব্যাহতি দেন নি।
এ অবস্থায় প্রতিষ্টান প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ হোসেন।
এদিকে অবসর নেওয়ার পরেও ফরাশ উদ্দিন বিদ্যালয়ে আসা অব্যাহত রাখেন।
গত ১২ মে ফরাশ উদ্দিনের কাছে চার্জ লিস্ট চাইলে ফরাশ উদ্দিন ফরিদ হোসেনকে বিদ্যালয়ের বারান্দায় পথরোধ করে মারতে উদ্যত হন।অন্যান্য শিক্ষকরা এসে ফরাশ উদ্দিনের কবল থেকে ফরিদ হোসেনকে রক্ষা করেন। পরদিন (১৩ মে) লিখিতভাবে আবারো সভাপতির কাছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অব্যাতি চান ফরিদ হোসেন।
১৪ মে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ম্যানজিং কমিটির সভাপতি এনু মিয়া ও সাবেক সভাপতি শহিদুল আলমের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে কথা বললে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন ফরাশ উদ্দিন।একপর্যায়ে আলমারির উপর থাকা ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে ফরিদ হোসেনকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন তিনি।শিক্ষকরা এসে ফরাশ উদ্দিনকে নিবৃত্ত করেন।এসময় ফরিদ হোসেনকে খুন করার হুমকি দেন ফরাশ উদ্দিন।
এ অবস্থায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকায় থাকা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ হোসেন এ ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয়টির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়েছেন।পাশাপাশি মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছেন।
অভিযুক্ত সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফরাশ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে এ বিষয়ে কোন রিপোর্ট করার দরকার নাই বলে মত প্রকাশ করেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল্লাহ জানান, ‘বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে।খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম ফয়সাল জানান, ‘বিষয়টি আমার নলেজে রয়েছে।এবং যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।