দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ উপজেলায় ৬১টি ভোটকেন্দ্রে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১ জন ভোটার রয়েছে। নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে এসে দোয়ারাবাজারে জমে উঠেছে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা। আসন্ন এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটের দিন আর মাত্র তিনদিন বাকী। প্রার্থীরা এখন কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো উপজেলা।
রাত দিন চলছে ছন্দে ছন্দে মাইকে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে কর্মীরা যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। দিচ্ছেন লিফলেট, চাচ্ছেন ভোট। প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত গ্রামে – গ্রামে, হাটবাজারে উঠান বৈঠক ও নির্বাচনি পথসভা করছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের আস্থা অর্জনে দিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। সবাই আশাবাদী নিজেদের জয়ের ব্যাপারে। কোন কোন প্রার্থীরা সাধারণ ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি মেলাচ্ছেন রাজনৈতিক নানা সমীকরণ।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক, বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান তানভীর আশরাফী, বোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েল। আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান আশিদ রাজা চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন।
সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, এবার চেয়ারম্যান পদে লড়াই হবে মূলত সেয়ানে সেয়ানে। বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান তানভীর আল আশরাফী চৌধুরী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েল এবং উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক এর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বেশিরভাগ সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, বাবু ও জুয়েলের মধ্যেই দ্বি-মুখী লড়াই অনুষ্ঠিত হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিন, দোয়ারাবাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’র সভাপতি বশির আহমদ, যুবলীগ নেতা প্রভাষক আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা জাতীয় পার্টি (জাপা’র) সাংগঠনিক সম্পাদক নুর হোসেন মোঃ আবদুল্লাহ, জে ইউ সেলিম, মোঃ জিয়াউর রহমান, মোঃ রাসেল মিয়া, মো. আবুল কালাম, শরীফ আহমদ, সোনা ধন দে, আব্দুছ সোবহান।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান দুইবারের ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা বেগম মিনা, লাইলী আক্তার লাকী, মোছাঃ শিরিনা বেগম, শামসুন নাহার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ঝর্ণা রানী দাশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত প্রতীক নিয়ে নিজেদের বিজয়ী করতে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ভোটাররা বলছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় পরিচয় ও নৌকা প্রতীক না থাকলেও মূলত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। দেশের বড় দল বিএনপি, জামায়াত সরাসরি এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এছাড়া এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শরীক দলগুলো কোনো প্রার্থী দেয়নি।
বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান তানভীর আল আশরাফী চৌধুরী বাবুর সমর্থকরা মনে করছেন, তিনি ভোটের মাঠে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন। তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদী তাঁর ভোটার ও সমর্থকরা।
আরিফুল ইসলাম জুয়েলের সমর্থক নেতা-কর্মীরা বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আরিফুল ইসলাম জুয়েল দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। এবার তিনি চমক দেখাতে পারেন। অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তাঁর দোয়াত কলম প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত।