ইসলামী জীবন বিধান,
ইসলামের পরিভাষায়, গোসল হল সমস্ত দেহ ধৌত করার মাধ্যমে পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা। কতিপয় ধর্মীয় উপাসনা এবং আচার-অনুষ্ঠান পালনের পূর্বশর্ত হচ্ছে গোসল। শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বে, ঈদের নামাজের পূর্বে, এহরামের পূর্বে, হজের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময়, অজ্ঞান হওয়ার পর সচেতন হলে অথবা আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পূর্বে গোসল করা মস্তাহাব।
আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের বলেছেন, ‘তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাকো, তবে নিজেদের শরীর (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নাও।’ (সুরা মায়েদা: ৬)
গোসল করার পর নামাজের জন্য কি নতুন করে অজু করতে হবে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল মুহাম্মাদ (সা.) গোসলের পরে নতুন করে অজু করতেন না। (তিরমিজি: ১০৭)
এ থেকে বোঝা যায়, গোসলের পর অযু করতে হবে না। কারণ, গোসলের মাধ্যমে অজু হয়ে যায়। গোসলের পর অজু ভঙ্গের কারণ পাওয়া না গেলে নতুন করে অজু করতে হবে না।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে গোসলের পর অজু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, গোসল অপেক্ষা কোনো অজু ব্যাপকতর? (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ৭৪৮)
মূলত গোসল করার পর অজু করার কোনো বিধান ইসলামে নেই। ফরজ গোসল হলে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া ফরজ এবং পরিপূর্ণ অজু করে নেওয়া সুন্নত, যা গোসলেরই অংশ। আর গোসল ফরজ না হলে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া সুন্নত এবং পরিপূর্ণ অজু করা মোস্তাহাব। তাই যথাযথভাবে গোসল করার পর নতুন করে আবার অজু করা ঠিক নয়। (সহিহ বুখারি: ২৪৮; উমদাতুল ক্বারি: ০৩/৮৬; বাহরুর রায়েক: ০১/৯৪; আদ্দুররুল মুহতার: ০১/৩২৩)