স্পোর্টস ডেস্ক,
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দীর্ঘদিন ধরেই তার ব্যাটে রান নেই। মাঝে ১ বছর তার ব্যাট হাসলেও এর আগে-পরে উপহার দিচ্ছে হতাশা। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক টি-২০তে বারবার সমর্থকদের হতাশ করছেন তিনি।
জাতীয় দলের হয়ে টি-২০ ফরম্যাটে সবশেষ ৪ ইনিংসে শান্ত দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন মাত্র একবার। এই চার ম্যাচে সবমিলিয়ে ৪৭ রান করেছেন তিনি। যা একজন অধিনায়ক তো দূর, তিন নম্বরে নামা কারো কাছ থেকে কেউ আশা করে না।
চলতি বছর সবমিলিয়ে ৯টি ম্যাচ খেলেছেন শান্ত। যেখানে একটি ফিফটিতে সর্বসাকুল্যে রান করেছেন ১৫৮। ফিফটি হাঁকানো ৫৩ রানের সেই ইনিংস বাদ দিলে আট ম্যাচে তার রান দাঁড়ায় ১০৫, গড় ১৩.১৩! যদিও অপরাজিত ফিফটির সুবাদে চলতি বছর তার গড় ১৯.৭৫।
এ অবস্থায় এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির টি-২০ ফরম্যাটের ক্যারিয়ার গড়ও শান্তর চেয়ে ভালো। এ বছর খেলা ৮ ম্যাচে ১৮৯ রান করেছেন তিনি। যেখানে গড় ২৭।
সবমিলিয়ে নারী দলের অধিনায়ক জ্যোতি ৯৫ টি-২০র ৯০ ইনিংসে ব্যাট হাতে করেছেন ১৮০২ রান। ২৫.৩৮ গড়ের এই ব্যাটারের সর্বোচ্চ সংগ্রহ অপরাজিত ১১৩। এই সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিনি সাতবার হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন।
বিপরীতে শান্ত এতগুলো ম্যাচ খেলেননি ঠিকই। তবে ৩৭ ম্যাচের ৩৬ ইনিংসে ৭৬০ রান করা এ ব্যাটারের ২৪.৫১ গড় মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। সর্বোচ্চ ৭১ রান করা এ ব্যাটার ফিফটি হাঁকিয়েছেন চারবার। স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০৯.৮২।
শুধু স্ট্রাইক রেটে পিছিয়ে থাকলেও অন্যান্য প্রায় সবদিকেই শান্তর চেয়ে এগিয়ে জ্যোতি। নারী ক্রিকেটে স্বাভাবিকভাবেই পুরুষদের চেয়ে রান ও গড় কম থাকে। সেখানে এমন পরিসংখ্যান যেন শান্তর ব্যাটিং দুর্দশাকেই ফুটিয়ে তুলেছে।
এছাড়া প্রশ্ন আছে শান্তর স্ট্রাইক রেট নিয়েও। এক্ষেত্রে তিনি কতটা পিছিয়ে? আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া ২০ দলের অধিনায়কদের মধ্যে ১৯তম অবস্থানে টাইগার কাপ্তান। যেখানে তার মান বাঁচিয়েছেন উগান্ডার অধিনায়ক।
ব্যাটিংয়ে টানা ব্যর্থতায় শান্তর ওপর ক্রমেই বিরক্ত ভক্তরা। ক্রিকেটে এতটা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য সহযোগী দেশের চাইতেও এতটা পিছিয়ে থাকা কি আমাদের দুর্বলতাকেই তুলে ধরে না?
আধুনিক ক্রিকেটে যেখানে অন্যান্য দলের টপ অর্ডার ব্যাটারদের লক্ষ্য থাকে বিধ্বংসী সূচনা এনে দেওয়া, সেখানে ১১০ স্ট্রাইক রেটের একজন নাম্বার থ্রি ব্যাটার দলের জন্য কতটা উপকারী সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। গড়ের ব্যাপারটা না হয় উহ্যই থাকুক।
সবমিলিয়ে শান্ত আবার রানে ফিরুক, এটাই সবার চাওয়া। অধিনায়ক যদি দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে না পারেন, সে দল লড়াইয়ের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে। তাই জাতীয় দল টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো করতে চাইলে শান্তর ব্যাট হাসার কোনো বিকল্প নেই।