স্পোর্টস ডেস্ক,
অবিশ্বাস্য! অসাধারণ! অকল্পনীয়!
ঠিক কোন শব্দে আপনি অপেক্ষাকৃত দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রের এমন জয়কে বর্ণনা করবেন। প্রত্যাশার যেই পারদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে টাইগাররা মাঠে নেমেছিল; তা রীতিমতো গুড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। আমার মতে, বাংলাদেশের এই পরাজয় নিতান্তই শোচনীয় এক অধ্যায়। শেষ ওভারের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যদের ৫ উইকেট হারিয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের যৌথ আয়োজকরা।
মঙ্গলবার (২১ মে) প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ তুলে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ৪৭ বলে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন তাওহীদ হৃদয়।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হাতে রেখে ১৯ দশমিক ৩ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিক দল।
চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন স্বাগতিকদের দুই ওপেনার মোনাঙ্ক প্যাটেল এবং স্টিভেন টেইলর। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি মোনাঙ্ক। ১০ বলে ১২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন স্বাগতিকদের অধিনায়ক।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে অ্যান্ড্রিস গাউসকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন টেইলর। ১৮ বলে ২৩ রানে গাউস আউট হলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন টেইলর। তবে মোস্তাফিজের কাটারে পরাস্থ হন তিনি। দ্য ফিজের ফাঁদে পা দেওয়ার আগে ২৯ বলে ২৮ রান করেন এই ওপেনার। ফিজের দ্বিতীয় শিকার বনে ১২ বলে ৪ রানে ফেরেন অ্যারন জোন্সও।
এরপর ব্যাট হাতে নেমে দলীয় বিপর্যয় সামাল দেন কোরি অ্যান্ডারসন এবং নিতিশ কুমার জুটি। তবে বিপদজনক হয়ে উঠার আগেই ১০ বলে ১০ রানে নিতিশকে থামান শরিফুল।
দলীয় ৯৪ রানে নিতিশ ফিরলে জয়ের জন্য কঠিন সমীকরণের সামনে পড়ে স্বাগতিকেরা। জয়ের জন্য শেষ পাঁচ ওভারে তাদের দরকার দাঁড়ায় ৬০ রান। এরপর ঝোড়ো গতির ইনিংসের জয়ের জন্য সমীকরণ ১২ বলে ২৪-এ নিয়ে আসেন সাতে নামা হারমীত সিং।
ইনিংসের ১৯তম ওভারে ১৫ রান তুলে নিয়ে সমীকরণ আরও সহজ করে নেয় স্বাগতিকেরা। শেষ ওভারে পার্টটাইমার স্পিনার রিয়াদের হাতে বল তুলে নেন শান্ত। তবে শেষ রক্ষা হয়নি টাইগারদের। রিয়াদের প্রথম ৩ বলেই ১১ রান তুলে নেন কোরি অ্যান্ডারসন এবং নিতিশ কুমার জুটি। শেষ পর্যন্ত ১৩ বলে ৩৩ রানের টর্নেডো ইনিংসে অপরাজিত থাকেন হারমীত। আর এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজের শিকার দুটি উইকেট। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন শরিফুল এবং রিশাদ।
এর আগে, টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করেন দুই টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস এবং সৌম্য সরকার। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তাদের কেউই। ১৫ বলে ১৪ রান করে লিটন আউট হলে, ১৩ বলে ২০ রান করে ফেরেন সৌম্য সরকার।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে উইকেট থিতু হতে পারেননি অধিনায়ক শান্তও। ১১ বলে মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন তাওহীদ হৃদয়। তবে ক্রিজে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি সাকিব। ১২ বলে ৬ রান করে রান-আউটের ফাঁদে পড়েন এই টাইগার অলরাউন্ডার।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪০ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন হৃদয়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২২ বলে ৩১ রানের ইনিংস সাজান মিস্টার সাইলেন্টকিলার।
শেষ পর্যন্ত জাকের আলীর ৫ বলে ৯ রান এবং হৃদয়ের ৪৭ বলের ৫৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন স্টিভেন টেলর। এ ছাড়া সৌরভ নেত্রাভালকার, আলী খান এবং জেসি সিং একটি করে উইকেট নেন।