স্পোর্টস ডেস্ক,
হৃদয়ের ফিফটি আর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং বাংলাদেশকে ১৫০ পার করিয়েছে।
বাংলাদেশের ইনিংসে কী হবে, মোটা দাগে সেটির একটা অনুমান সম্ভবত ম্যাচের আগেই করে নেওয়া যায়। অনেকদিন ধরে যে একই চিত্র বাংলাদেশ দলের!
লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা ব্যর্থ হবেন। টপ অর্ডারে দু-একজন কোনো একদিন রান পেতে পারেন, কোনো কোনো দিন তা-ও পাবেন না। এরপর মাঝের দিকে তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, মাহমুদউল্লাহদের কাজ হয়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ইনিংসকে একটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া।
প্রতিপক্ষ কোন মানের দল, সেটা সম্ভবত এখন আর বিচার করে না বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে হলেও যা, আজ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও তা-ই দেখা গেল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কী করবে, সেটা ভিন্ন প্রশ্ন এবং আরও বড় শঙ্কা।
আপাতত খবর এই, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজ তাওহীদ হৃদয়ের ফিফটি এবং পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর (২২ বলে ৩১) সঙ্গে তাঁর ৬৭ রানের জুটিতে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে তুলতে পেরেছে ১৫৩ রান।
হিউস্টনের প্রেইরি ভিউতে পিচটা ড্রপ ইন পিচ, এখানে উইকেট কেমন আচরণ করে সেটা একটা আলোচনার বিষয় ছিল আগে থেকেই। পিচে বল কিছুটা ধরে ধরে এসেছে। তাতে শুরুতে ভুগেছেন লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা।
অবশ্য লিটন-শান্তদের ফর্মের যা অবস্থা চলছে অনেকদিন ধরে, তাতে তাঁদের রানখরার পেছনে পিচের অবস্থাকে দায়ী করার মতো অবস্থায় তাঁরা আছেন কি না, সেটাও এক প্রশ্ন বটে!
জিম্বাবুয়ে সিরিজে টপ অর্ডারে রান পাওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান তানজিদ তামিমকে আজ বসিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু যাঁদের ফর্মে ফেরানোর জন্য বাংলাদেশ আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, সেই লিটন-শান্ত সব চেষ্টাকে বৃথা করে চলেছেন বারেবার। লিটন দুবার জীবন পেলেও রান আর পেলেন না, ১৫ বলে ১৪ রান করে আউট হয়ে গেছেন পঞ্চম ওভারে। নাজমুল হোসেন শান্ত তো রানের জন্য হাঁসফাঁস করতে করতে একটা পর্যায়ে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পডই হয়ে গেলেন! শেষ পর্যন্ত অষ্টম ওভারে ১১ বলে ৩ রান করে আউট হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এ দুজনের মাঝে সৌম্যও বিদায় নিয়েছেন। সৌম্য ওপেনিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিলেন, তিনটি চার মেরেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও পাওয়ার প্লে-র আগেই বিদায় নিয়েছেন ১৩ বলে ২০ রান করে। পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশ পেল মাত্র ৩৭ রান।
এরপর চারে নেমে সাকিব আল হাসান আউট হলেন হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে। ১২ বলে ৬ রান করে সাকিব যখন ফিরছেন, বাংলাদেশের সামনে যুক্তরাষ্ট্রকেই যেন মনে হচ্ছিল ‘অস্ট্রেলিয়া’ – ইনিংসের ১২তম ওভারে গিয়েও তখনো ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের রান মাত্র ৬৮!
এই ডুবন্ত বাংলাদেশের জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম-হামজার মতো হয়ে হাজির হয়ে গেলেন তাওহীদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনের জুটিতে যা কিছুটা স্থায়ী আগ্রাসন দেখল বাংলাদেশ। ৩২ বলেই জুটিতে ফিফটি হয়ে গেল, বাংলাদেশ ১০০ পেরোল ১৫তম ওভারে। অবশ্য এর মধ্যেও ভাগ্যের সাহায্য পেল বাংলাদেশ, তাওহীদ হৃদয় একবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন বলটা ‘নো’ হওয়ায়!
কিছুক্ষণ পর হৃদয় ফিফটিতে পৌঁছে গেলেন ৪০ বলে (৩ চার ২ ছক্কায়)। তবে এ দুজনের ব্যাটে যখন বাংলাদেশ সহজেই দেড় শ পার করে এগিয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছিল, ১৯তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ আউট হয়ে যান। হৃদয় আর জাকের আলী (৫ বলে ২ চারে ৯) মিলে বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত দেড় শ ঠিকই পার করিয়েছেন। শেষ বলে আউট হওয়া হৃদয় শেষ পর্যন্ত করেছেন ৪৭ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৫৮ রান।
অবশ্য বাংলাদেশের দেড় শ পার হওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদেরও অবদান আছে। পাঁচটি নো বল করেছেন তাঁরা। অতিরিক্ত থেকেই বাংলাদেশ পেয়েছে ১২ রান।