নিউজ ডেস্ক,
হবিগঞ্জে মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার ৩টি চা বাগানের উৎপাদনের কারখানা ১ মাস দরে বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকের বেতন রেসন বোনাস বন্ধ বিপাকে শ্রমিকরা। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কর্মবিরতি বাতিল।
চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় আড়াই কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল বকেয়ার কারনে হবিগঞ্জের দেউন্দি টি কোম্পানির তিনটি কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এতে চা উৎপাদন কারখানা বন্ধ রয়েছে ফলে চা পাতা সংগ্রহ পর ও চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন তিনটি বাগানের ৪ হাজার ৮০০ শ্রমিক।
এতে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে বাগান তিনটির শ্রমিকদের বেতন -রেসন-বোনাস। তাই দাবি আদায়ে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা আজ জেলা প্রশাসক জুলুফা সুলতানা হস্তক্ষেপে তাদের কর্মবিরতি সহ সকল আন্দোলন বন্ধ রেখেছেন।
হবিগঞ্জের জেলার দেউন্দি টি কোম্পানির অধীনে চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি, লালচাঁন্দ ও মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া চা বাগানের গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। যার পরিমাণ আড়াই কোটি টাকার বেশি। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিল পরিশোধ না করায় গত ১৪ মার্চ কারখানা তিনটির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে কারখানা তিনটি বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে চুনরুঘাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জুনাইদুর রহমান বলেন, ‘দেউন্দি টি কোম্পানির তিনটি কারখানার কয়েক মাসের প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ টাকা বিল বকেয়া পড়েছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিল পরিশোধ না করায় ১৪ মার্চ কারখানা তিনটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’
জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের শাহজী বাজার আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী হোসাইন মো. জুনায়েদ বলেন, ‘দীর্ঘদিনের গ্যাস বিল বকেয়া থাকার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’
নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েতের সভাপতি কমেড নায়েক জানান বাগান তিনটিতে নিয়মিত কাজ করেন ৪ হাজার ৮০০ শ্রমিক। অনিয়মিত হয়ে পড়েছে এসব শ্রমিকের বেতন-বোনাস। শ্রমিক নেতাদের দাবি- এরিয়ার, বেতন, বোনাস ও পেনশনের টাকা মিলিয়ে বাগান তিনটিতে শ্রমিকদের পাওনা কয়েক কোটি টাকা। নিয়মিত জমা হচ্ছে না প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাও।
সম্প্রতি কোনো বাগানে দুই সপ্তাহ, আবার কোনটিতে তিন সপ্তাহের মজুরি বকেয়া পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মজুরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবন কাটছে নিম্ন আয়ের চা শ্রমিকদের। জেলা প্রশাসক স্যারের কথা আমরা আন্দোলন বন্ধ রেখেছি আগামি বুধবারে স্যার আমাদের কে ডাকেছেন দেখি কি হয় যদি কোন সুরাহ না হয় তাহলে আমরা তিন বাগান এবং শ্রীমঙ্গল এর কয়েকটি বাগান কে নিয়া বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিব।
নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক বারতি সাঁওতাল বলেন, ‘আমাদের তিন সপ্তাহের তলব দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। আমরা খুব কষ্টে আছি। কয়েক দিন ধরে ভাতের মার আর টিলা থেকে শাকপাতা সেদ্ধ করে খাচ্ছি। এভাবে আর কতদিন চলব? এত গরমের মধ্যে আমরা পাতা তুলেও যদি বেতন না পাই, তা হলে আমাদের কষ্ট কে দেখবে?’
এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহাগ সাহেব জানান গ্যাস ও বিদ্যুৎ বকেয়া জন্য লাইন কাটা। ফলে চা উৎপাদন বন্ধ। কেন বকেয়া পরল বিল জানতে চাইলে তিনি বলেন আসলে চায়ের দাম নাই বল্লেই চলে, অন্য দিকে শ্রমিকের সুযোগ সুবিধা দিতেই কোম্পানি হিমসিম খাচ্ছে। কয়েক মাস ধরে কোম্পানি কে লস গুনতে হচ্ছে। তবে খুব শ্রীগ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আস্বস্ত করেন।