বিশেষ প্রতিনিধি,
রাজশাহীতে বোনকে পরিকল্পিতভাবে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে।
পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় মেয়েটির সৎভাই ছাড়াও তার স্ত্রী এবং এক বন্ধু ছিলেন। তারাও এই খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত। এ ঘটনায় তিনজনকেই আটক করেছে পুলিশ।
নিহত তরুণীর নাম সন্ধ্যা রানী (২০)। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শীচা পাচপীর গ্রামের শ্রী হরিলালের মেয়ে সন্ধ্যা রানী।
খুনের অভিযোগে আটক তিনজন হলেন- সন্ধ্যার সৎভাই ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবু (২২), ফুলবাবুর স্ত্রী মিনতী রানী (২৫) এবং বন্ধু আদিল আহমেদ পলক (১৯)। পলকের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার লালপুকুর গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফুলবাবু তার স্ত্রী মিনতী ও সৎবোন সন্ধ্যাকে নিয়ে রাজশাহীর কর্ণহার থানা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় নির্মাণাধীন ফাঁকা পড়ে থাকা একটি দোতলা বাড়ির ওপরের তলার বাথরুমে সন্ধ্যার মরদেহ পাওয়া যায়। তার পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গোদাগাড়ী থানার ওসি আবদুল মতিন জানান, সন্ধ্যা রানীর মরদেহের পাশে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়। এই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নিহত তরুণীর পরিচয় জানা যায়। এছাড়া এই খুনের সঙ্গে জড়িতদেরও শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এরপরই অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।
ওসি জানান, ফুলবাবু তার স্ত্রী আর বোনকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখানে সন্ধ্যার একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাজশাহী চলে আসার পর ফুলবাবু তার বোনের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়।
এ জন্য ফুলবাবু, তার স্ত্রী মিনতী ও আদিল মঙ্গলবার বিকেলে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যাকে সিএনজি অটোরিকশায় করে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় যান।
আসার আগে রাজশাহীর হড়গ্রাম বাজার থেকে একটি ছোট ছুরি আর কাটার কিনেন। গোগ্রাম গিয়ে তারা সিএনজিটি ছেড়ে দেন। পরে হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেন। এ সময় কৌশলে ওই নির্মাণাধীন ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।
যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে ধানের জমির নালায় ছুরি পুঁতে রেখে যান। আসামিদের নিয়ে বিকেলে ওই ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হবে। কিন্তু মামলার বাদী করার মতো কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।