স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে দুই উপজেলায় ২০ একর আয়তনের ঊর্ধ্বে ৬৮টি ও ২০ একরের নিচে ৪৫টি জলমহাল রয়েছে। এ দুই উপজেলায় গত প্রায় ১৫ দিন ধরে শ্যালো মেশিন দিয়ে সরকারিভাবে ইজারাকৃত বিভিন্ন জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরার হিড়িক পড়েছে।
এতে করে হাওড়াঞ্চলে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন দিন দিন কমে আসছে। আর চলতি বোরো মৌসুমে এভাবে জলমহালগুলো শুকিয়ে মাছ ধরায় হাওড় এলাকার কৃষকের বোরো জমিতে সেচ কাজও ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরই এ সময়ে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ে থাকা জলমহালগুলোর পানি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি এক একটি জলমহালে ৫-৬টি শ্যালো মেশিন বসিয়ে তা শুকিয়ে মাছ ধরা শুরু করেন।
এ বছরও ফাল্গুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এভাবে মাছ ধরছেন ওইসব অসাধু ব্যক্তি। আর তা চলবে চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। জলমহাল ইজারার নীতিমালা অনুযায়ী জলমহালের পানি শুকিয়ে মাছ ধরার কোনো নিয়ম না থাকলেও এখানে গত প্রায় ১৫ দিন ধরে এভাবেই প্রকাশ্যে মাছ ধরা হচ্ছে। এতে করে হাওড় এলাকার জলমহাল থেকে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কমে যাচ্ছে।
পাশাপাশি ওইসব জলমহালের চারপাশে থাকা বোরো জমিতে সেচ দেওয়া নিয়েও চরম বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকরা। জলমহালগুলো শুকানোর ফলে হাওড়ের অনেক কৃষকই বাধ্য হয়ে সেচ দিতে নিজ জমিতে গভীর নলকূপ বসাচ্ছেন।
উপজেলার মেধার বিল এলাকার কৃষক আলি নূর, আবুল কালাম, কাসেম মিয়াসহ অনেক কৃষকই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল থ্যাইক্যাই আমরা এই মেধা বিলের পানি দিয়া বোরো আবাদ কইরা আইতাছি। এহন কয়েক বছর ধইরা এলাকার প্রভাবশালীরা এই বিল ইজারায় আইন্যা মেশিন দিয়া শুকাইয়্যা মাছ ধরে।’
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন জলমহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করেছি। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মধ্যনগর উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, শ্যালো মেশিন দিয়ে জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। যারা এ কাজ করছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।