ইসলামি জীবন:
তারাবিহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- বিশ্রাম, স্বস্তি, প্রশান্তি ইত্যাদি। তারাবিহর প্রতি ৪ রাকাত নামাজ পড়ার পর একটু বিশ্রাম গ্রহণ করা হয় বা বিরতি নেওয়া হয়। রমজান মাসে এশার নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করাকে তারাবিহ বলা হয়। তারাবিহ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমাদান মাসে তারাবিহর নামাজ পড়বে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহীহ আল-বুখারি, হাদিস: ১৯০১, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭৫৯,)
রাসুল (সা.) বলেছেন, রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরজ আদায় করল। (শুআবুল ঈমান : ৩/৩০৫-৩০৬)
তারাবিহ নামাজের নিয়ত
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রাকাআতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতে রাসুলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতি শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।
অর্থ : আমি কেবলামুখি হয়ে দু’রাকাত তারাবিহর সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজের নিয়ত করছি; আল্লাহু আকবার।
নিয়ত বাংলায়ও পড়া যাবে। অনেক আলেম বলেছেন, নিয়ত না করলেও নামাজের সওয়াবের কোনো তারতম্য হয় না।
তারাবিহ নামাজের দোয়া
প্রতি চার রাকাত নামাজের পর বিশ্রাম নেওয়া হয়। এ সময় একটি দোয়া প্রায় সব মসজিদের মুসল্লিরা পড়ে থাকেন। তা হলো-
উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’
তবে মনে রাখতে হবে, এই দোয়া না পড়লে নামাজ হবে না, এমন ধারণা করা যাবে না। অনেক আলেমের মতে, তারাবিহ নামাজে চার রাকাত পর পর বিশ্রামের সময়টিতে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়া, তওবা,-ইসতেগফারগুলো পড়াই উত্তম।
তারাবিহ নামাজের মোনাজাত
তারাবিহর নামাজ শেষে দেশের মসজিদগুলোতে একটি দোয়া পড়ে মোনাজাত করার প্রচলন রয়েছে। তা হলো-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’
উল্লেখ্য, তারাবিহর নামাজ ২ রাকাআত করে পড়তে হয়। ২ রাকাত করে ৪ রাকাআত শেষ হওয়ার পর দোয়া পাঠ করতে হয়। এভাবে রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন ২০ রাকাআত করে তারাবিহ আদায় করতে হয়।